শেখ হাসান গফুর, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি নেতা আয়ুব হোসেন। এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজিতে নাম লিখিয়েছেন দেবহাটা উপজেলার উত্তর পারুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আয়ুব হোসেন। দেবহাটা উপজেলার বাসিন্দা তারেক মনোয়ার জানান, গত ১ মার্চ ২০২৫ তারিখ পারিবারিক কলহের জের ধরে মামলা এবং পুলিশি হয়রানি করার ভয়ভীতি প্রদর্শন করার মাধ্যমে আয়ুব হোসেন ও ওহেদ আলী আমার নিকট ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে আয়ুব হোসেন ও তার সাঙ্গোপাঙ্গদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আমার সংসারের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আয়ুব হোসেন টাকার জন্য এমন কোন অপকর্ম নেই যা সে করে না। আয়ুব হোসেন এলাকায় একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। আয়ুব হোসেনের রয়েছে একটি সক্রিয় সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। এই সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট চক্রের মুল হোতা আয়ুব হোসেন। সন্ত্রাসী এই চক্রটির অপরাধ, অপকর্মে এলাকার সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানান, আয়ুব হোসেন বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় জমি দখল থেকে শুরু করে চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এর আগে দেবহাটা উপজেলার উত্তর পারুলিয়া এলাকায় মো. মনিরুল ইসলাম এর ক্রয়কৃত জমিতে বিএনপি নেতা আয়ুব হোসেন এর ইন্ধনে ৬/৭ জনের সন্ত্রাসী চক্র অনধিকার প্রবেশ করে। এসময় ভুক্তভোগীর বাঁশ ঝাড় থেকে জোরপূর্বক ৪০টি বাঁশ কর্তন করে নিয়ে যায়। যার বাজার মুল্য আনুমানিক ১২ হাজার টাকা। শুক্রবার দেবহাটা, উত্তর পারুলিয়া এলাকায় বাঁশ কর্তনের ওই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মনিরুল ইসলাম উত্তর পারুলিয়া গ্রামের প্রয়াত আফছার আলী গাজীর ছেলে। অবৈধভাবে বাঁশ কর্তনে অংশ নেওয়া ৬/৭ জনের সন্ত্রাসী চক্রটির মূল হোতা দেবহাটা উপজেলার ২ নম্বর পারুলিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আয়ুব হোসেন। অবৈধভাবে বাঁশ কর্তনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে দেবহাটা উপজেলার উত্তর পারুলিয়া গ্রামের প্রয়াত ধুরবার গাজীর ছেলে মো. নুরুল হক (৬৫), একই গ্রামের প্রয়াত দরবার গাজীর ছেলে মো. বেল্লাল হোসেন (৪৫), মো. গোলাম হোসেন (৫০) ও মো. হযরত আলী। উল্লেখিত ০৪ জন ব্যক্তির সাথে আরও ২/৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বাঁশ কর্তনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অংশ নেয়, যাদের নাম জানা যায়নি। ভুক্তভোগী মো. মনিরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ০৪ জুলাই আনুমানিক সকাল ৮.৩০ মিনিট সময় দলবদ্ধভাবে ৬/৭ জন ব্যক্তি একযোগে আমার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করে বাঁশ কর্তন করতে থাকে। এসময় আমি তাদেরকে বাঁধা দিতে গেলে তারা আমাকে চড়, থাপ্পড়, লাথি এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোলা জখম করে। আমি আহত হওয়ার পর ওই সন্ত্রাসী চক্রটি বাঁশ ঝাড় থেকে প্রায় ৪০টি বাঁশ জোরপূর্বক কর্তন করে। সন্ত্রাসী চক্রটি বাঁশ কর্তন করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, জীবন নাশের হুমকি সহ জমি দখল করার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. মনিরুল ইসলাম গত ০৪ জুলাই ৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জন ব্যক্তিকে আসামি করে দেবহাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে আয়ুব হোসেন এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয় অভিযুক্ত আয়ুব হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তারেক মনোয়ারের পারিবারিক কলহ মিমাংসা করার জন্য কথা বলেছিলাম। আমি তার কাছে কোন চাঁদা দাবি করিনি।