মো. তাসলিম উদ্দিন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সরাইল
“আইন আছে কাগজে কলমে ” বাস্তবায়ন কি আছে হাট-বাজারে ” বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলের হাট-বাজার ভেজালপণ্যে সয়লাব হয়ে গেছে। শিশু খাদ্য থেকে শুরু করে, কসমেটিক্স, মিষ্টি, মসলা, ভোজ্যতেল কিসে নেই ভেজাল! এনিয়ে উদ্বিগ্ন ভোক্তারা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারী না থাকায় ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। উপজেলায় প্রশাসনের ভেজাল বিরোধী অভিযান মাঝে মধ্যে চোখে পড়ে। অথচ ভেজাল নির্মূলে কঠিন আইন রয়েছে। বলা যায়, আইন আছে আইনের জায়গায় আর ভেজালপণ্য ব্যবসায়ীদের দখলে হাট-বাজার। আজো সর্বোচ্চ বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি কোনো ভেজালকারীকে। ফলে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ভেজালকারীরা। এতে করে ভোক্তারা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ইতোমধ্যে সরব হয়ে উঠেছে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রয়কারী সিন্ডিকেট। লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব নকল ও ভেজাল খাদ্য কোমলমতি শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। অপর দিকে মাছ- জেলি ও মাংসে ফরমালিন, শাক- সবজিতে, কলা, পেঁপে, ফলমূল, শুঁটকিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্যে জন স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর নানা উপকরণ ও রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। এদিকে ভেজাল পণ্যের জন্য ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। অনেক ভোক্তাই মনে করছেন এসব পণ্য ক্রয় করে তারা ভোক্তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যদি নিয়মিত এসব ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে তাহলে তারা এ থেকে কিছুটা হলেও সমাধান পাবে। মানুষের অন্যতম প্রধান মৌলিক অধিকার খাদ্য। তবে সে খাবার অবশ্যই হতে হয় বিশুদ্ধ। দূষিত বা ভেজালমিশ্রিত খাদ্য মানুষের জন্য স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়ে থাকে। কিন্তু বিশুদ্ধ খাবার খুঁজে পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। বাজার থেকে কেনা কোনো খাদ্যই যেন আর বিশুদ্ধ নেই। কাপড়ের বিষাক্ত রং, ধানের তুষ, ইট, কাঠেরগুঁড়া, মটর ডাল ও সুজি মেশানো হয় খাবারের মশলায়। ভোজ্যতেল, আটা, চিনি, কেক, বিস্কুট কিছুই আজ ভেজালমুক্ত নয়। মাছ-মাংসে ফরমালিন, শাক-সবজিতে বিষাক্ত স্প্রে, সব ধরনের ফলমূল দ্রুত পাকিয়ে রঙিন বানাতে সর্বত্র কার্বাইড, ইথোফেন আর পচন রোধে ফরমালিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। এসব পণ্যে রাসায়নিকের অপপ্রয়োগ দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করতে পারে বলে এমন অভিযোগ তার। সরেজমিনে এ ব্যপারে সরাইল বাজারের কয়েকজন মুদি দোকানদার বলেন, বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ভেজালপণ্যের ছড়াছড়ি। সাধারণ ক্রেতারা কিছু টাকা কম পাওয়ার লোভে ওই সব ভেজাল পণ্য কিনছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর থেকে। তার দামে কমে নিচ্ছেন ভেজালপন্য। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এরই মধ্যে মাছ বাজারে একজন মাছ ব্যবসায়ীকে মোবাইল কোর্টে সাজা প্রদান করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী’র সঙ্গে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, ভেজালপন্যের সঙ্গে জড়িত থাকলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। এইসব ভেজাল পণ্য কোথায় তৈরী হচ্ছে। তার খুঁজে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি।
