ePaper

শ্যামনগরে জুয়ার মাস্টার এজেন্ডরা রক্ষা পেতে রাজনৈতিক নেতাদের ছায়াতলে

রবিউল ইসলাম (সাতক্ষীরা) শ্যামনগর

জুয়ার মাস্টার এজেন্ডরা নিজেদের রক্ষা করতে রীতিমতো দৌড়ঝাপ শুরুকরেছে। অনেক মাস্টার এজেন্টদের দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে চলাফেরা করতে। রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতা পেতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে রাজনৈতিক প্রোগ্রাম করতেও দেখা গেছে। বাদ যায় মানবিক কাজে সহযোগিতা করতে। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া জুয়ার এজেন্টরা ভুলে গেছে মানুষকে মূল্যায়ন করতে। সম্প্রতি অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভয়ংকর কিছু তথ্য, আটুলিয়া নওয়াবেঁকী বাজার কমিটির সেক্রেটারির মনিরুজ্জামান মনির পরিবারের ৫ জনই মাস্টার এজেন্ট। মনিরুজ্জামানের ছেলে আবু বক্কার ও তার স্ত্রী রুনা, ভাই আটুলিয়া ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্তারুজ্জামান লিটিলূর ছেলে আব্দুর রহমান, নুরুল হকের স্ত্রী, রহমত আলীর ছেলে ইমদাদুল, হাফিজুর ছেলে আশিক, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চাউলখোলা গ্রামের সাইফুল ইসলাম সোহাগ, পদ্মপুকুর গ্রামের সাহিনুর রহমান ফয়সাল, আল আমিন, পাখি মারা রাকিব, কাছারি ব্রিজের আবু সাঈদ, নাজমুল হোসেন, খুটিকাটা গ্রামের ওবায়দুল্লাহ ঢালী, জাকির হোসেন সানা, আবু বাক্কার, গড় পদ্মপুকুর গ্রামের ইমন হোসেন, চন্ডিপুর গ্রামের আব্দুর রহিম, গড় কুমারপুর নাঈম হোসেন, বাইনতোলা গ্রামের মমিনুর ইসলাম সাগর, ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের গুমানতলী গ্রামের আসিফ ইমরান, কাজারী ব্রিজের শহিদুল মিস্ত্রির ছেলে আকরামুল ও তার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার মেরি, ছোট কুপট গ্রামের তরিকুল ইসলাম সহ আরো অনেকে। এতে যুক্ত রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের পদধারিও। সেই প্রভাব দেখিয়ে তারা প্রতিনিয়ত জুয়ার এজেন্টের ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে। গেল কয়েকদিন মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হওয়ায় জেগে বসেছে প্রশাসন। অভিযানের পাশাপাশি গ্রেপ্তারাও করেছে। সাতক্ষীরা শহর থেকে ডিবি পুলিশ আটক করেছে আটুলিয়া ইউনিয়নের মাস্টার এজেন্ট সুমনকে। এদিকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে চিহ্নিত পদধারী মাস্টার এজেন্ট শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক বেলাল হোসেন ও আটুলিয়া মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ মিলন হোসেন সহ বেশ কয়েকজন। স্থানীয় গোলাম রব্বানী সহ অনেকে জানান, অনলাইন জুয়া মাদক চেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। মাদকাসক্ত হইলে টাকা নষ্ট করতে সময় লাগে। কিন্তু যারা অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়েছে তাদের সেকেন্ডের মধ্যে লক্ষ লক্ষ টাকা চলে যাচ্ছে। দিন দিন অনলাইন জুয়া যেভাবে প্রতিটা পরিবারের ছড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত সময়ে নির্মল করা না গেলে এলাকায় অর্থনৈতিক সংকট পড়বে। আটুলিয়া ইউনিয়নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবদল কর্মী জানান, আটুলিয়া যুবদলের সদস্য সচিব আবুজার গিফারীর ছত্রছায়ায় থেকে গেল ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে বাইরে থেকে নর্তকী ভাড়া করে এনে কুরুচি সম্পন্ন নাচ পরিদর্শন করায়। যদিও আটুলিয়া যুব দলের সদস্য সচিব আবুজার গিফারীর সাথে জুয়াড়িদের কোন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন তিনি। এ বিষয়ে নওয়াবেঁকী বাজার বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান মনি জুয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন ১৫ দিন আগ পর্যন্ত তার ছেলে মাস্টার এজেন্ট ছিল প্রশাসনিক ধরপাকড়ার শুরু হলে বর্তমানে সম্পৃক্ততা নেই। শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক বেল্লাল তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, জুয়ার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, অনলাইন জুয়ার মাস্টার এজেন্টের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *