শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন চলছেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক         

সবশেষ সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসে ঢালাও দরপতন হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস আজ রোববারও শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক কমেছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে সবকয়টি মূল্যসূচক। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও ডিএসইর মতো এ বাজারটিতেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।

রোববার (২০ এপ্রিল) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু লেনদেনের সময় ১০ মিনিট না গড়াতেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ডিএসইতে ১০১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৩টির। এছাড়া ৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৩টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ১২৭টির দাম কমেছে। এছাড়া ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৫৬টির দাম কমেছে। এছাড়া দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া ৪টি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১৮টির এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সার্বিকভাবে দাম কামার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৩৫ পয়েন্টে নেমে গেছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮৭২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫১ কোটি ৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ইস্টার্ন ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ৪২ লাখ টাকার। ১০ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- শাইনপুকুর সিরামিক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেক্সিমকো ফার্মা, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৪ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩১টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *