শীতের সকালে গরম পিঠা বিউটির হাতে তৈরির দৃশ্য গ্রামীণ বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িত। যশোরের কেশবপুর উপজেলা শহরের বালিয়াডাঙ্গা বিশ্বাসপাড়ার বাসিন্দা বিউটি পিঠা বানিয়ে সংসার চালান। তাঁর তৈরি ভাপা ও পাকান পিঠা এলাকার মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। শীতের এই কয়েক মাসে তিনি পিঠা বিক্রি করে উপার্জন করেন এবং সংসারের খরচ মেটান।
বিউটির জীবন ও সংগ্রাম
বিউটি একজন সংগ্রামী নারী। কয়েক বছর আগে স্বামী হারিয়ে তিনি পিঠা বিক্রির মাধ্যমে ছয় সন্তানের অভাবী সংসার চালাচ্ছেন। তাঁর তৈরি পিঠা প্রতিদিন স্থানীয়দের মুখে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। সকাল হলেই বিভিন্ন বয়সের মানুষ তাঁর পিঠার স্বাদ নিতে আসেন। বিশেষ করে বাচ্চারা তাঁর পিঠার বড় ভক্ত।
পিঠা তৈরির প্রক্রিয়া
বিউটি ভোরবেলা থেকেই চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় এবং নারকেল ব্যবহার করে পিঠা তৈরি করেন। তাঁর দক্ষতা ও মমতা মিশে থাকে প্রতিটি পিঠার মধ্যে। প্রতিটি পিঠা মাত্র পাঁচ টাকা করে বিক্রি হলেও প্রতিদিন তিনি পাঁচ থেকে ছয় শ টাকা আয় করেন।
মানুষের ভালোবাসা ও জনপ্রিয়তা
স্থানীয় বাসিন্দারা যেমন তাজউদ্দীন, আবু সাঈদ এবং হাসানুর রহমান বিউটির পিঠার বড় ভক্ত। তাঁরা প্রতিদিন সকালে তাঁর পিঠা খেতে আসেন। এলাকায় তিনি ‘পিঠা আপা’ নামে পরিচিত। তাঁর এই পরিশ্রম ও দক্ষতা তাঁকে এলাকায় অনন্য স্থান দিয়েছে।
চ্যালেঞ্জ ও চাহিদা
বিউটির জন্য শীতের এই কয়েক মাস উপার্জনের মূল সময়। শীতের মৌসুম শেষ হলে তাঁর আয় কমে যায়। বিধবা ভাতা পেতে বেশ কয়েকবার আবেদন করলেও তা এখনো মেলেনি। এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তিনি তাঁর জীবনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপসংহার
শীতের সকালে গরম পিঠা বিউটির হাতে তৈরি প্রতিটি পিঠা শুধু একটি খাদ্য নয়; এটি গ্রামীণ জীবনের উষ্ণতা এবং ঐতিহ্যের প্রতীক। তাঁর এই সংগ্রামী জীবন আর দক্ষতা আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। বিউটির এই প্রচেষ্টা এবং প্রতিভাকে কেবল তার এলাকাবাসীর নয়, সারা দেশের মানুষের কাছেও তুলে ধরতে হবে।
Share Now