ePaper

লালমনিরহাটে যুবলীগ সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

লিয়াকত আলী, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি এটিএম মুসা শামীমের বিরুদ্ধে দলিল লেখক সমিতির ১১ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ তুলেছেন সাধারন দলিল লেখকরা। যুবলীগ নেতা এটিএম মুসা শামীম উপজেলার তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একজন দলিল লেখক এবং দলিল লেখক সমিতির সভাপতি। অভিযোগে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি এটিএম মুসা শামীম পেশায় তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একজন দলিল লেখক। সাবেক সমাজকল্যান মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্টজন হওয়ার সুবাদে মন্ত্রীর ক্ষমতার প্রভাবে দলিল লেখক সমিতির সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন শামীম। এরপর যুবলীগের প্রভাব দেখিয়ে দলিল প্রতি দুইশত হারে টাকা চাঁদা তুলেন তিনি। সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হওয়ায় দলিল প্রতি চাঁদা দিতে বাধ্য হত জমি ক্রেতা ও দলিল লেখকরা। তার দাফটে অসহায় সাধারন ক্রেতা ও দলিল লেখকরা কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি। দলিল প্রতি ২শত হারে চাঁদা তুলেই থেমে থাকেনি মুসা শামীম। উপরন্তু দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের সঞ্চিত টাকার ১১ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেন তিনি। দলিল লেখক সমিতির ৮৫ জন সদস্য তাদের আয়ের একটা অংশ সমিতির ফান্ডে সঞ্চয় করেন। সেই টাকা ঈদসহ বিশেষ সময় সকল সদস্য তা নিজেরা বন্টন করে নেন। ২০২৪ সালে ৮ মাসে সঞ্চায় জমা হয় প্রায় ১৮ লাখ টাকা। দুই ঈদে দলিল লেখকদের ৭ লাখ টাকা প্রদান করা হলেও বাকি ১১ লাখ টাকা সমিতির সভাপতি যুবলীগ নেতা মুসা শামীম আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ সদস্যদের। সঞ্চিত টাকা দাবি করলে সমিতির সভাপতি শামীম শাসন গর্জন করেন। এমনি মারধর পর্যন্ত করেন। তার কথার বিরোধিতা করলে সমিতির ঘরে আটকিয়ে রেখে নির্যাতন করা হত বলেও দলিল লেখকদের অভিযোগ। তবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে আত্নসাৎ করা টাকা ফেরত দিতে চেয়েও ফেরৎ দেননি শামীম। এমনকি গেল ঈদ উল ফিরতেও সমিতির সদস্যরা পাননি তাদের সঞ্চিত অর্থ। যা আত্নসাৎ করেছেন সমিতির সভাপতি যুবলীগ নেতা শামীম। অবশেষে দলিল লেখক সমিতির সাধারন সদস্যরা তাদের সঞ্চিত টাকা উদ্ধারে সমিতির সভাপতি শামীমের বিরুদ্ধে সাব রেজিস্টার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। দলিল লেখক আব্দুল মতিন বলেন, বিগত দিনে শামীমের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যেত না। ৫ আগস্টের পর একটু স্বস্তিতে আছি। দলিল লেখক জিনাত হোসেন নোবেল বলেন, শামীমকে প্রত্যেক দলিলে দুইশত টাকা দিতে হতো। না দিলে দলিল আটকানো সহ সমিতির ঘরে আটকে রাখা হতো। দলিল লেখক তৈয়ুবুর রহমান রাকু বলেন, দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে শামীম সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। ভুয়া দাতা তৈরী করেও দলিল সম্পাদন করতেন তিনি। আওয়ামীলীগের সময় শামীম পারত না এমন কোন কাজ ছিল না সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। দলিল লেখক আমিরুজ্জামান মতি বলেন, শামীম গত ১৫ বছরে চাঁদাবাজি করে অনেক অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ের ১১ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন তিনি। তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এটিএম মুসা শামীম বলেন, সমিতির নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ মিথ্যে অভিযোগ তুলেছে প্রতিপক্ষ। সমিতির উন্নয়ন মুলক কাজেই খরচ হয়েছে সমিতির টাকা। আওয়ামী ক্ষমতায় কোন কিছুই করি নি। যা করা হয়েছে তা সবে সমিতির সদস্যদের সিদ্ধান্তে ভিত্তিতে এবং সমিতির কল্যানে করা হয়েছে। তুষভান্ডার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্টার (অতিঃ দাঃ) আরিফ ইসতিয়াক বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত করে বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *