ePaper

রংপুরে কমেছে নিত্যপণ্যের দাম, স্বস্তিতে ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আলুসহ বিভিন্ন সবজি ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমায় সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। কমেছে গরুর মাংস ও পোলট্রি মুরগির ডিমের দাম। তবে চালের বাজার সামান্য ঊর্ধ্বমুখী। আজকের বাজার দর অনুযায়ী, প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম প্রকারভেদে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, দু-একদিনের মধ্যে চালের দামও কমে যাবে। এবারে রমজানে নিত্যপণ্যসহ কোন পণ্যের দামই তেমন বাড়েনি। আজ বুধবার রংপুর নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি টমেটো ১৫-২০ টাকা, গাজর ২০-২৫ টাকা, ঝিংগা ১১০-১২০ টাকা, ফুলকপি ১৫-২০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ১০ টাকা পিস, চালকুমড়া (আকারভেদে) ৪০-৫০ টাকা, কাঁচকলা ২৫-৩০ টাকা হালি, দুধকুষি ৫০-৬০ টাকা, সজনে ১৫০-১৬০ টাকা, চিকন বেগুন ৩০-৩৫ টাকা, গোল বেগুন ৪৫-৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০-৮০ টাকা, পটল ৭০-৮০ টাকা, শিম ২৫-৩০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা, শসা ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, লাউ (আকারভেদে) ২৫-৩০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, লেবুর হালি ৩০-৩৫ টাকা, ধনেপাতা ৩০-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫-৩০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪৫০-৫০০ টাকা এবং সব ধরনের শাক ১০ থেকে ২০ টাকা আঁটি বিক্রি হচ্ছে। সিটি বাজারে সবজি কিনতে আসা লোকমান হোসেন বাসসকে বলেন,  ‘রোজা শুরুর পর থেকেই সবজির দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে। তাই রোজা উপলক্ষে সবজি কিনতে বাড়তি চাপ নিতে হয়নি।’ খুচরা বাজারে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৩৫-৪০ টাকা, আদা ১০০-১২০ টাকা, রসুন ৮০-৯০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে পোলট্রি মুরগির ডিমের দাম। পাইকারি বাজারে প্রতি হালি ডিমের দাম ৩২ টাকা। তবে খুচরা বাজারে সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ডিমের হালি ছিল ৪০-৪১ টাকা।বাজার ঘুরে দেখা যায়, নাগালের মধ্যে রয়েছে সব ধরনের আলুর দাম। কার্ডিনাল আলু ২০ টাকা কেজি, শিল আলু ৩৫ টাকা, ঝাউ আলু ৩৫ টাকা এবং বগুড়ার লাল পাগড়ি আলু ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।লালকুটি বাজারের সবজি বিক্রেতা রশিদ মিয়া  বাসসকে বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার রমজানে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে আলু, পেঁয়াজ, মরিচের দাম অনেকটাই কম। সেইসঙ্গে ডিমের দামও কমতে শুরু করেছে। তবে বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু চড়া। আর কয়েক দিন পর সরবরাহ বাড়লে দামও কমে আসবে।রমজানের শুরু থেকে স্থিতিশীল রয়েছে মুরগির দাম। খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা, পাকিস্তানি সোনালি মুরগি ২৬০-২৮০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০-৫৫০ টাকা এবং পাকিস্তানি লেয়ার ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে গরুর মাংস ৬৫০-৬৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ১০০০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।সিটি বাজারের মুরগি বিক্রেতা  হোসেন আলী বলেন, মুরগির আমদানি বেড়েছে। রমজানে মুরগির দাম নিয়ে যে শঙ্কা ছিল তা এখন নেই। শুরু থেকেই দাম স্থিতিশীল আছে।একই বাজারে মুরগি কিনতে আসা সাইফুল ইসলাম(৫৫) বাসসকে বলেন, ‘গরুর মাংস ও খাসির মাংস কেনার সামর্থ্য আমার নেই, তাই সোনালি মুরগিই ভরসা। এই মুরগির দাম রোজা শুরুর আগে ৩৫০ টাকা ছিল, এখন  ২৫০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে। এটি আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জন্য একটা স্বস্তির বিষয় । সবজির দামও এখন কম।’ নগরীর লালকুঠি বাজারে গরুর মাংস কিনতে আসা আজিজুর রহমান বলেন, ‘গরুর মাংস গত ১৫ দিন ধরে ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই স্বল্প আয়ের মানুষও ইচ্ছে করলে গরুর মাংস কিনতে পারছে।’খুচরা বাজারে এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডাল (চিকন) ১৩০-১৪০ টাকা, মাঝারি ১০০-১১০ টাকা, মুগ ডাল ১৬০-১৮০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, চিনি ১২০-১২৫ টাকা, ছোলাবুট ১০০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫০ টাকা, খোলা আটা ৪০-৪৫ টাকা এবং ময়দা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।চালের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুচরা বাজারে ‘বিআর-২৮’ ৮৫ টাকা, জিরাশাইল ৭৩-৭৫ টাকা, মিনিকেট ৯০-৯৫ টাকা এবং নাজিরশাইল ৯৫-৯৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।সিটি বাজারের চাল বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, ‘সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম প্রকারভেদে ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। বাজারে নতুন ধানের চাল না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা দেখছি না।’মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে রুই মাছ ২৭০-৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০-২৫০ টাকা, কারপু ২০০-২২০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০-১৬০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৬০, কাতল ৪০০-৪৫০ টাকা, বাটা ১৬০-১৮০ টাকা, শিং ৩০০-৪০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৫০-২৫০ টাকা এবং গছি মাছ ৮০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।রংপুরে জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বাসসকে বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। রোজাদার মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেদিকে  সরকার খেয়াল রাখছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *