ePaper

 মোরেলগঞ্জে ১৫ শতক জমিতে কৃষি চমক  জাদু শসায় লাখপতি পারভেজ            

এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলবর্তী খাদ্যশস্য ভান্ডারখ্যাত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মালচিং পদ্ধতিতে এ প্যাটান মাচা মাধ্যমে  শীতকালিন জাদু শসা চাষ করে এখন গোটা জেলায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সফল চাষি কৃষক পারভেজ খান। জীব রোপনের ৭০/৮০ দিনের মধ্যে প্রতিটি শসা গাছে অধিক ফলন। এ প্রজাতের ফলনের আয়ুষ্কাল ৪২ দিন। বাজারে এ শসার চাহিদা দিগুন। খেতে সুস্বাধু মিষ্টতা। সাইজ সাধারণ শসার চেয়ে বড়, কালার রং ভালো থাকায় দামও পাচ্ছেন বেশী কৃষক। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দৈবজ্ঞহাটী ইউনিয়নের আলতিবুরুজবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মজিদ খানের ছেলে সফল কৃষক মো. পারভেজ খান। বেকার জীবনে দুশ্চিন্তায় সময় কাটছিলেন। ছেলেমেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে সংসার চলবে। অভাবে কোনভাবেই ছাড়ছে না। হিমসিম খাচ্ছেন সংসার চালানোর চিন্তায়। নিজ ক্রয়কৃত ১৫ শতক জমি এক সময়ে সামান্ন ধান হতো। সেই জমিতে এখন কৃষি দপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী মালচিং পদ্ধতিতে জাদু শসা চাষ করে এখন গোটা উপজেলায় সারাজাগিয়েছেন   সফল চাষি পারভেজ খান। এ পর্যন্ত ক্ষেত থেকে ৫ বারে ৪৫ মন শসা তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। প্রতিমন শসা প্রথমে ২ হাজার পরবর্তীতে ১৮শ’ টাকা দরে প্রায় ৯০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পেরেছেন। আরও ৩/৪ বার শসা তুলতে পারবেন তিনি জানান। যেখানে সাধারণ শসা প্রতি মন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকায়। জাদু শসা প্রতিমনে বারতি পাচ্ছেন ৮শ’ টাকা।  কৃষক পারভেজ খান বলেন, ১৫ শতক জমিতে জাদু শসা উৎপাদনে বীজ, ওষুধ, মারচিং পেপার, শ্রমীক মজুরি দিয়ে ব্যায় হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। এ ক্ষেত থেকে লক্ষাধিক টাকার বেশী শসা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদি। সে এ পদ্ধতিতে ভালো ফলন পাওয়ায় আনন্দিত। বিশেষ করে বিভিন্ন স্থান থেকে চাষিরা তার ক্ষেত দেখতে এসে তাদেরও আগ্রহ বাড়ছে। এ ফলন দেখে আগামি বছরে অনেক কৃষকই এ জাদু শসা চাষে ঝুঁকবেন। পরিশ্রম সফলতার মূল চাবিকাঠি। তার বেকার জীবন ঘুচিয়ে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন।  মোরেলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, কৃষককে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সীড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে। এ বিষয়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, তার ইউনিয়নে এক টুকরো জমি কোথাও খালি থাকবে না। সেক্ষেত্রে কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চাষিদেরকে আধুনিক প্রশিক্ষন সময় উপযোগী পরামর্শ। যে কারনেই আজ সফল চাষি পারভেজ খান এখন গোটা উপজেলার দৃষ্টান্ত। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা  মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার  এ বছর ১৫০০হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে। এসব সবজির মধ্যে আছে শিম, লাউ, মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আবার সেগুলো বেশি দামে বিক্রিও করতে পারছে কৃষকরা। এতে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আগাম সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন।নতুন নতুন ফসল উৎপাদনে চাষিদেরকে আধুনিক প্রশিক্ষন সময় উপযোগী পরামর্শ। যে কারনেই আজ সফল চাষি পারভেজ খান এখন গোটা উপজেলার দৃষ্টান্ত। আগামী দিনে কৃষকরা যেন আগাম সবজি চাষে আরো আগ্রহী হয় সে ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আশা করছি আগামীতে এই সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *