রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবত বালু খেকোরা অবৈধভাবে নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। একাধিকবার জেল জরিমানা করা হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা এসব বালু দস্যুদের। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে বিভিন্ন সময় রাতেও বালু কাটতে দেখা গেছে বালু দস্যুদের। বিভিন্ন গনমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ ও স্থানীয়দের অভিযোগের পর গতকাল বৃহস্পতিবার মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে যায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সহ স্থানীয় সাংবাদিকদের লক্ষ করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে বালু খেকো সন্ত্রাসীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় ছিলেন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাসুদ রানা, রায়পুরা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সাজ্জাদ হোসেন। অভিযানে বালু মহালের নির্ধারিত স্থানের বাইরে গিয়ে চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় একটি ড্রেজার জব্দ করা হয়। এবং ২ জন বালু দস্যুকে আটক করে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অন্তত ২০-৩০টি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। শত শত বালুবাহী বাল্কহেড (বালু বোঝাই স্টিলের নৌকা) দিয়ে বালু অন্যত্রে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। অস্ত্রধারী বালু দস্যুদের আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের ভয়ে এলাকার কেউ তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায় না। নদীর তীরবর্তী লোকালয় থেকে কাটিং ড্রেজার এর পরিবর্তে নিষিদ্ধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে প্রতিবছরই নদী ভাঙনে শতশত বাড়িঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, নির্ধারিত সীমানা ছেড়ে রায়পুরা সীমানায় এসে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং বিভিন্ন লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। অভিযান পরিচালনার সময় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে। কাটিং ড্রেজার দিয়ে বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলন করার শর্তে দেয়া হয় ইজারা। কিন্ত কোন শর্তের তোয়াক্কা করছেনা তারা। আমরা পরবর্তীতে যৌথ বাহিনী নিয়ে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবো। এবং গুলিবর্ষণ এর সাথে যারা জড়িত খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা করবো।