ePaper

ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পতনে শেয়ারবাজার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক            

বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় কয়েকদিন দেশের শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দেখা যায়। এবার সেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। যার প্রভাবে সার্বিক শেয়ারবাজারেও পতন প্রবণতা দেখা দিয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগের সপ্তাহের শেষ চার কার্যদিবস শেয়ারবাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে। শেয়ারবাজার টানা নয় কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় সার্বিক বাজারেও দরপতন হয়।এ পরিস্থিতিতে সোমবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুর দিকেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওযার পর বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। এতে মূল্যসূচকও ঊর্ধ্বমুখী হয়।কিন্তু দুপর ১২টার পর থেকে আবার একের পর এক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমতে থাকে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতগুলোর ওপরও। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকও আবার ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩০টির। আর ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক খাতের ২১টির শেয়ার দাম কমার বিপরীতে ৭টির দাম বেড়েছে। আর ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমার বিপরীতে দাম বেড়েছে ৪টির।

এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৪০টির দাম কমেছে এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৬টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪০টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫০টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৫টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৬১ পয়েন্টে নেমে গেছে।মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। তবে লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮০৫ কোটি ৩৯ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৬৫ কোটি ৪ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৫৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৪৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা যমুনা অয়েলের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার। ৩০ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার নদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, রবি, উত্তরা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, আইডিএলসি এবং বেক্সিমকো ফার্মা।

অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৭টির এবং ৩২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *