ePaper

বৈসাবি উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে বিজু মেলা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ক’দিন পরেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ মেতে উঠবে ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের আনন্দে। বৈসাবিকে ঘিরে এরইমধ্যে খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে ১৬ দিনব্যাপী বিজু বৈসু সাংগ্রাই মেলা। এ উৎসবকে ঘিরে এবার খানিকটা আগেভাগেই খাগড়াছড়িতে বিজু মেলার আয়োজন করেছে নারী উদ্যোক্তারা। মেলায় স্থান পেয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের পোশাক, তৈজসপত্র, গহনা ও ঐতিহ্যবাহী বাহারি সব খাবারের স্টল। ঐতিহ্যের এসব পণ্য ও বাহারি খাবারের সমারোহ দেখে খুশি মেলায় আগত দর্শনার্থীরা।পাহাড়ের মানুষের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি তথা বিজু সাংগ্রাই বৈসুক পালন করা হচ্ছে উৎসবের আমেজে। আলাদা নামে হলেও চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ একযোগে পালন করে এ উৎসব। চাকমারা বিজু, ত্রিপুরারা বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই নামে এ সামাজিক উৎসব পালন করে। তবে বাংলা ভাষাভাষি মানুষ এ উৎসবকে বৈসাবি নামেই চেনে। উৎসবকে ঘিরে নানান আয়োজন শুরু হয়েছে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। পক্ষকাল ব্যাপী চলবে এ উৎসব। বৈসাবী উৎসবের বর্ণিল আয়োজনের অংশ হিসেবে ২৩ মার্চ শনিবার সকালে খাগড়াছড়ি সূর্যশিখা ক্লাব প্রাঙ্গনে খাগড়াছড়িতে নারী উদ্যোক্তা নেটওয়ার্ক এর আয়োজনে এবং জাবারাং কল্যাণ সমিতি ও  টিএএমএস প্রকল্পের সহযোগিতায় পণ্য ক্রয় ও বিক্রয়ের অংশ হিসেবে ১৬ দিনব্যাপী বিজু সাংগ্রাই বৈসুক মেলার উদ্ধোধন করা হয়।নারী নেত্রী ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য শেফালিকা ত্রিপুরা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ১৬ দিনব্যাপী এ মেলা’র উদ্বোধন করেন।নারী উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কের সভাপতি লাকী চাকমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাবারাং কল্যাণ সমিতি’র নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার নারায়ন চন্দ্র খাঁ, টিএএমএস প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়ক পাইউমং চৌধুরী, নারী উদ্যোক্তা অর্থি চাকমা।

মেলায় পাহাড়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, পিঠা-পুলি, গহনা, রাংবাতাংসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন উদ্যোক্তারা। এ ছাড়া মেলায় নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর আলোকচিত্র ও ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও হস্ত সামগ্রী প্রদর্শনী হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী বাহারি সব খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছে নারী উদ্যোক্তারা।মেলায় আগত দর্শনার্থীরা বাসস কে জানান , বিলুপ্ত প্রায় এসব পণ্য ও বাহারি খাবারের সমারোহ দেখে তারা খুশি । এদিকে খাগড়াছড়ি নারী উদ্যোক্তা নেটওয়াকের সভাপতি লাকী চাকমা ও সমন্বয়কারী অর্থি চাকমা জানান, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এ মেলার আয়োজন। তারা জানালেন মেলায় ঐতিহ্যবাহী পোশাক, তৈজসপত্র, গহনা ও খাবার প্রদর্শনীর মাধ্যমে টিকে থাকবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের চিরায়ত সংস্কৃতি। আর তাই প্রতিবছরই এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা তাদের। মেলার  সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, মেলায় প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে। ৪০টি স্টলে বেচাকেনা হবে প্রায় ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা। এ বিজুমেলা চলবে আগামী ৭ এপ্রিল পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *