বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে এবং বর্তমানে এটি ১৯ বিলিয়ন ডলারের বেশি। যদিও আকুর বিল পরিশোধে রিজার্ভ কিছুটা কমেছিল, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ভালো প্রবাহের ফলে আবারও তা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এবং দেশের অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক।
বিশ্বব্যাংকের ঋণের পরিমাণ বাড়লে, আশা করা যাচ্ছে ডিসেম্বরের মধ্যে রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে। আইএমএফ-এর নিয়ম অনুযায়ী, ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন হলেও, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, রিজার্ভের পরিমাণ ইতোমধ্যেই বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।
রিজার্ভের পরিমাণ ও উৎস
বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার তিনটি প্রধান হিসাব সংরক্ষণ করে থাকে:
- মোট রিজার্ভ: এটি বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ। এতে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য সহজ শর্তের ঋণসহ অন্যান্য তহবিলও অন্তর্ভুক্ত।
- আইএমএফ হিসাব: এতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী বিভিন্ন ঋণ বাদ দিয়ে এক নির্দিষ্ট তহবিলের হিসাব রাখা হয়।
- ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ: বর্তমানে যা ১৪ বিলিয়ন ডলার। এটি সরাসরি দেশের আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যবহারযোগ্য থাকে।
রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বৃদ্ধি মূলত রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি আয়ের ওপর নির্ভর করে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করলেও, রিজার্ভ দ্রুত আবার বাড়তে শুরু করেছে। এর মূল কারণ হিসেবে রেমিট্যান্স প্রবাহের উন্নতি এবং রপ্তানি আয়ের বৃদ্ধি উল্লেখ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি
বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান। গত কিছু বছরে রিজার্ভ কমে যাওয়ার পর, সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার ফলে বর্তমানে রিজার্ভে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। সরকারের পদক্ষেপের ফলে, রিজার্ভের অবস্থা এখন শক্তিশালী এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ
বর্তমানে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, আহসান এইচ মনসুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে বিদ্যমান ব্যান্ড ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করা। এ পদক্ষেপের ফলে ডলারের মূল্য নির্ধারণে আরো নমনীয়তা এসেছে এবং এতে দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
ভবিষ্যত দৃষ্টিভঙ্গি
এখনকার মতো রিজার্ভ বাড়ানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা গেলে, আশা করা যায় যে, শীঘ্রই ২০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা জানাচ্ছেন, “রিজার্ভ একটি চলমান বিষয়, মাঝে মাঝে তা কমে আবার বাড়ে, তবে বর্তমানে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো প্রবাহে রয়েছে।”
উপসংহার
বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক শক্তির দিক থেকে এটি একটি ইতিবাচক লক্ষণ। চলতি বছর এবং আগামীতে রিজার্ভ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদী অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও অর্থনীতির খবর পেতে এখানে যান
Share Now