ePaper

বলছে ট্রাম্প প্রশাসন/কথা না শুনলে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কথা মতো কাজ না করলে ভবিষ্যতে আর কোনও বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এমন কথাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট।

তবে হার্ভার্ড জানিয়েছে, তারা আইন মেনে চলবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে কোনোভাবেই সরে আসবে না। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট (ডিএইচএস) জানিয়েছে, যদি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা সংক্রান্ত তথ্য ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী সরবরাহ না করে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি হারাবে। হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের এটিই সর্বশেষ কড়া পদক্ষেপ।

ডিএইচএস সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম বুধবার জানান, হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ ২.৭ মিলিয়ন ডলারের দুটি সরকারি অনুদান বাতিল করা হয়েছে। নোম জানান, তিনি হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছেন, যেখানে কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীর কথিত “অবৈধ ও সহিংস কার্যকলাপের” রেকর্ড চাওয়া হয়েছে এবং তা ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।

নোমের ভাষায়, “হার্ভার্ড যদি প্রমাণ দিতে না পারে যে তারা আইন অনুযায়ী সকল বাধ্যবাধকতা পূরণ করছে, তবে তারা আর বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার সুযোগ পাবে না।”

অন্যদিকে হার্ভার্ড জানিয়েছে, তারা চিঠিটি পেয়েছে এবং আইন মেনে চলবে, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে কোনোভাবেই সরে আসবে না তারা।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলা বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি এবং এসব আন্দোলনে বিদেশি শিক্ষার্থীরা জড়িত। এসব শিক্ষার্থী হামাসকে সমর্থন করে বলেও ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে।

প্রতিবাদকারীরা বলছেন, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে কথা বলা বা গাজায় ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করা মানেই চরমপন্থা বা ইহুদিবিদ্বেষ নয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, এসব আন্দোলনে ইহুদি ছাত্র-ছাত্রীদের একটি অংশও অংশ নিচ্ছেন।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে দেশজুড়ে শত শত শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে এবং কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের ৯ বিলিয়ন ডলারের সরকারি অনুদান পর্যালোচনার ঘোষণা দেয়। “মাস্ক পরা নিষিদ্ধ”, “ডাইভার্সিটি প্রোগ্রাম বাতিল”-সহ একাধিক শর্ত আরোপের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

হার্ভার্ড এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করলে ২.৩ বিলিয়ন ডলার অনুদান স্থগিত করে ট্রাম্প সরকার। এমনকি হার্ভার্ডের করমুক্ত সুবিধা বাতিলের হুমকিও দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগ (আইআরএস) হার্ভার্ডের করমুক্ত মর্যাদা বাতিলের পরিকল্পনা করছে এবং শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হতে পারে।

হার্ভার্ড বলছে, এই সিদ্ধান্ত আইনবিরুদ্ধ, নজিরবিহীন এবং শিক্ষার্থী সহায়তা ও গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *