ePaper

বন্যার ধকল কাটিয়ে জমজমাট ফেনীর ঈদবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠেছে ফেনীর মানুষের ঈদ কেনাকাটা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। গত বছর জুলাই-আগস্টের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর ঈদুল ফিতর ঘিরে ফের আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা। শেষ সময়ে ক্রেতাদের উপস্থিতিতে আশানুরূপ ব্যবসার প্রত্যাশা করছেন তারা।  বুধবার (২৬ মার্চ) শহরের বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা ছুটছেন ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় মার্কেট ও অভিজাত বিপণি-বিতানগুলোতে। ঈদের ঠিক আগ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। কাপড়, জুতা, কসমেটিকস কিংবা গয়নার দোকান, সবখানেই দেখা গেছে ক্রেতার ভিড়। ঈদ উপলক্ষ্যে ব্র্যান্ডের আউটলেটগুলোতে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। তবে দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ফেনীর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের ভাষ্যমতে, শহরে ছোটবড় প্রায় ১০-১২ হাজার দোকান রয়েছে। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এবারের ঈদ বাজারের মধ্য দিয়ে কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশা করছেন তারা।   শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ারের ব্যবসায়ী মো. সজীব বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রমজানের শুরুতে বিক্রি কম ছিল। তবে শেষ সময়ে এসে বিক্রি বেড়েছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দুপুর ও সন্ধ্যার পর পর ক্রেতার ভিড় বেশি থাকে। বড় বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক বন্যায় আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। তার মধ্যে আগস্টে দেশের পট পরিবর্তন হয়েছে। সবমিলিয়ে এবার বেচাবিক্রি নিয়ে অনেক শঙ্কা থাকলেও শেষ সময়ে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতাদের মধ্যে দাম নিয়ে অসন্তোষ দেখা গেছে। শহরের বড় বাজারে কাপড় কিনতে আসা সাদিয়া শ্রাবন্তী নামে এক ক্রেতা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের জন্য নতুন কাপড় কিনতে এসেছি। পোশাকের দাম বেশি চাচ্ছে। কিন্তু ঈদে পোশাক তো কিনতেই হবে। তাই আমার সাধ্যের মধ্যে যা ভালো লেগেছে তাই কিনছি। রাশেদুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, গত বছর যে দামে জামা কিনেছি সেই একই জামা এবার ৭০০ টাকা বেশি দাম চাচ্ছে। তারপরও ঈদের কথা চিন্তা করে বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। ফেনী শহর ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান সোহেল ঢাকা পোস্টকে বলেন বলেন, ১৫ রমজানের পর থেকে বেচাবিক্রি বেড়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি ব্যবসায়ী নেতাদের মাধ্যমে মার্কেটগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ঈদে বেচাবিক্রি আশানুরূপ হলে বন্যায় ব্যবসায়ীদের যে ক্ষতি হয়েছিল তার কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবে।

এ ব্যাপারে ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান সমন্বয়ক মুশফিকুর রহমান পিপুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, শহরে ছোটবড় মিলিয়ে ১০-১২ হাজার দোকান রয়েছে। ঈদে শতকোটি টাকার বেশি ব্যবসা হতে পারে। অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবসায়ীরা দেশের পট পরিবর্তন ও ভয়াবহ বন্যার মতো বড় দুটো ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। এটির প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। তারপরও সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত সন্তোষজনক রয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্য জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও অনুকূলে রয়েছে। এদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে সড়ক ও মার্কেটগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। টহলের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকের একাধিক টিম কাজ করছে। এছাড়া মার্কেটগুলোতেও নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত থেকে কাজ করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *