সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
বাবা-মা হারা এতিম মেয়ে খুশি খাতুন। জন্মের পর বাবা-মাকে হারিয়ে দারিদ্রতার সাথে লড়াই করে দাদা-দাদীর কাছে বেড়ে ওঠেছে। শত কষ্টের মাঝেও খুশিকে লালন-পালন করে বড় করে তোলেন দাদা-দাদী। তবে খুশি যখন বিয়ের উপযুক্ত হয় তখন দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় বৃদ্ধা দম্পত্তি। বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক হলেও কিভাবে বিয়ে দেবে খুশিকে এমন চিন্তয় দু-চোখের পাতা এক হতো না খুশির দাদা বৃদ্ধ ওসমান মিয়া ও তার স্ত্রী মসিরনের। বিষয়টি মানবতার ফেরীওয়ালা খ্যাত মামুন বিশ্বাসকে অবগত করেন। মামুন বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে ওয়ালে পোস্ট করলে মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলে। কয়েক দিনের মধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে ১লাখ ৯৬ হাজার টাকা পেয়ে যান। সেই টাকা দিয়েপে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার বনবাড়িয়া এলাকার মৃত খোকনের মেয়ের খুশির সাথে পার্শ্ববর্তী তাড়াশ উপজেলার খালকুলা এলাকার ইসহাকের ছেলে ছীনের সাথে জমকালো বিয়ের আয়োজন করা হয়। সাজানো হয়েছে বিয়ে বাড়ীর গেট। চলছে বাদ্য বাজনা। গ্রামের বৃদ্ধাও আনন্দে নাচাচাচি করছে। আবার অন্য নারীরা কেউ মাংস পরিস্কার করছে, কেউবা মাছ ভাজি করছে। বাবুর্চিরা রান্না-বান্না করছে। বান্ধবীরা সাজিয়ে তুলছেন খুশিকে। দুপুরে পর বর যাত্রী আসলে খাওয়া-দাওয়া করানো হয়। এরপর পড়ানো হয়। বিয়ে। এমন বিয়ের আয়োজন কখনো কল্পনা করেনি খুশির দাদা-দাদি। তারা বলছেন, খুশিকে রেখে তার বাবা-মা মারা যায়। তারপর থেকে তারা দুজন লালন পালন করে বড় করে তোলেন। বিয়ের বয়স হলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। এ অবস্থা তারা মামুন বিশ্বাসের কাছে যান। আজ মামুন বিশ্বাসের মাধ্যমেই দেশবাসীর কল্যাণে তার নাতির বিয়ে হওয়ায় দুজনেই খুশি। শত কষ্টের মাঝে বেড়ে উঠলেও ধুমধাম আয়োজনে বিয়ে হতে দেখে সন্তুষ্ট প্রতিবেশীরা। এরকম চমৎকার পরিবেশে বিয়ে হবে কল্পনাও করেনি খুশি। দাম্পত্য জীবনের জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন খুশি ও তার স্বামী। মামুন বিশ্বাস বলছেন, খুশির জীনব খুবই কষ্টের ছিল। খুশির জন্য ১লাখ ৯৬ হাজার টাকা সংগ্রহ হয়। পরে সেই টাকা দিয়ে ৫ আনা স্বর্ণ, ১০ ভরি রুপা, খাট- বাক্স, লেপ-তোষকসহ বিয়ের যাবতীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়। এরপর জমাকালে আয়োজনে খুশিকে বিয়ে দেয়া হয়। যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
