ePaper

ফেনীতে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুকে হত্যা

সাহেদ চৌধুরী, ফেনী

নিখোঁজের ৪ দিন পর ডোবায় মিলল অপহৃত শিশুর লাশ। ঘটনাটি ঘটেছে ফেনী পৌরসভার দেওয়ানগঞ্জ এলাকায়। ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় রেললাইনের পাশে একটি ডোবা থেকে আহনাফ নাশিদ (১০) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নাশিদ এর বাবা মাঈন উদ্দিন ফেনী কার্ডিয়াক হাসপাতালের পরিচালক ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে কর্মরত। নাশিদ মাঈন উদ্দিন সোহাগের একমাত্র সন্তান। সে ফেনী গ্রামার স্কুলের ছাত্র ছিল। সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে ফেনী শহরের একাডেমী আতিকুল আলম সড়কে প্রাইভেট পড়তে যায় আহনাফ। প্রাইভেট পড়ে আসার পথে কে বা কারা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারী চক্র তার পরিবারের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে নাশিদের পিতা বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন ১ জনকে আটক করে। আটককৃতের জবানবন্দি ভিত্তিতে পুলিশ দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় রেললাইনের পাশ থেকে আহনাফের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়। পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, নাশিদ ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিখোঁজ হয়। রাত ২টার দিকে ভিকটিমের বাবা ফেনী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। নিখোঁজ শিশুটিকে খুঁজতে পুলিশের একটি টিম মাঠে কাজ শুরু করে। গতকাল বুধবার রাতে ভিকটিমের পিতা সোহাগ থানায় এসে বলে আশ্রাফ হোসেন তুষার (১৮) নামের একটি ছেলেকে তার সন্দেহ হয়। সে ফেনী পলিটেকনিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তখন ভিকটিমের পিতাকে আমরা বলি থানায় একটি মামলা করতে। ভিকটিমের পিতার মামলার প্রেক্ষিতে আমরা তুষারকে আটক করি। তাকে থানায় ৪ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারণ বেরিয়ে আসে। তুষারের জবানবন্দির আলোকে এ ঘটনায় জড়িত আমরা আরো ২ জনকে আটক করে নিয়ে আসি। তারা হলেন, মোবারক হোসেন ওয়াসিম ও ওমর ফারুক রিফাত। পুলিশ সুপার আরো জানান, তিন আসামীর জবানবন্দি অনুযায়ী শিশুটি যখন কোচিং শেষ করে বাসায় ফিরছিলো তখন তুষার এবং ওয়াসিম তাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যাবে বলে সিএনজি চালিত অটোরিকসায় উঠায়ি নিয়ে যায়। ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা ও ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন। পরে আহনাফ নাশিতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *