ব্যুরো চিফ, ফরিদপুর ব্যুরো
জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার বৃহত্তর ফরিদপুরের সভাপতি ও দৈনিক রুপালী বাংলাদেশ পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি এস.এম আকাশের গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে তাকে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন রিমন শরীফ নামে এক চিহ্নিত দুর্বৃত্ত ও মাদক কারবারী। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে মধুখালী উপজেলার চরমনোহরদিয়া গ্রামে সাংবাদিক তার বাড়ি সংলগ্ন নদীর ঘাটে গোসল করে ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। এসময় জাহাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল ইসলাম বাচ্চুর ভাতিজা লিটু মোল্যা ও মির্জাকান্দী গ্রামের জাহিদ শেখ নামে দুই ব্যক্তি ওই ঘাটে গোসল করতে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই এই ঘটনা ঘটে বলে জানান তারা। জানা যায়, ৬ মাস আগে সাংবাদিক দম্পতি তাদের নিরাপত্তার জন্য পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমির চারিপাশে সীমানা প্রাচীর করার উদ্যোগ নিলে মাদক কারবারী রিমন ও তার স্ত্রী আসমা বেগম সাংবাদিকের বাড়ীর প্রবেশ পথের মাঝখানে ছোট একটি গাছের চারা লাগিয়ে তার নিজস্ব পথ আটকে দেয়। পরে পুলিশের অনুরোধে রিমনের বাবা সাংবাদিক দম্পতির প্রবেশপথ থেকে গাছের চারা সরিয়ে ফেলে। বর্তমানে পুলিশের কার্যকরী ভূমিকা না থাকায় মাদক কারবারী রিমন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সাংবাদিক এস. এম আকাশ ফরিদপুর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিমন গংদের ৪জনের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারায় মামলা করেন। আদালত সাংবাদিকের পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমিতে রিমন গংদের প্রবেশ না করার জন্য এপ্রিলের ২২ তারিখে চুরান্ত আদেশ দেন। কিন্তু রিমন ও রিমনের পরিবার আদালতের আদেশ অমান্যকরে এখনো সাংবাদিকের বাড়ির ভিতর দিয়ে জোরপূর্বক ইজি বাইক চালিয়ে যাতায়াত করছে। এলাকাবাসীরা জানান, একজন পাগলেও বুঝে তার সামনের জায়গার মালিকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে প্রবেশ পথ নিতে হয় এবং সামনে যে থাকে পেছনের লোকদের চলাচলের সুযোগ দিতে হয়। কিন্তু রিমন তার রাস্তার সামনের জমির মালিক সামাদের ছেলে জাহিদের কাছে পথ না চেয়ে অন্যায়ভাবে পেশিশক্তি ব্যবহার করে পশ্চিম পাশে সাংবাদিকের পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমির বাড়ীর ভিতর দিয়ে অটো নিয়ে যাতায়াত করছে যা চরম অন্যায়। ফরিদপুর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি কে. এম জাফর জানান, আমি দেখেছি রিমনের সামনের জায়গা আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদ শরীফের। রিমন জাহিদের কাছে পথ চাইবে এবং জাহিদ তার পিছনের শরীকদের রাস্তায় উঠার সুযোগ দিবে। কিন্তু জাহিদ তা না করে রিমনদেরকে কুপরামর্শ দিচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, রিমন একজন মাদককারবারী, বেশ কয়েকবার মাদকসহ র্যাব পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। রিমনের চলাফেরাও মাদককারবারীদের সাথে। আর এই কাজে তাকে সহযোগিতা করে তার স্ত্রীসহ তার মা ও স্কুল শিক্ষিকা বোন। এবিষয়ে ফরিদপুর জেলা শ্রমীকদলের নেতা আব্দুস সাত্তার জোদ্দার জানান, সাংবাদিক এস. এম আকাশ আমার ভাগ্নে। সে খুবই নম্র ভদ্র এবং পরোপকারী মানুষ। কখনো গ্যাঞ্জাম ফ্যাসাদ করেনা। সেই জন্যই আমার ভাগ্নে আদালতের আশ্রায় নিয়েছে। এখন দেখছি মাদককারবারীরা আদালতের আদেশও মানছেনা।
সাংবাদিক এস.এম আকাশ জানান, বড় চাচা ও ছোট চাচা পূর্ব পাশে এবং আমার আব্বা ও সেজ চাচা পশ্চিম পাশে বসবাস। সেজ চাচার সব জমি আমার কাছে বিক্রি করেছে। এখন আমি আমার পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত জমিতে সীমানা প্রাচীর করতে পাচ্ছি না। আদালতের চুড়ান্ত আদেশ পেয়েও এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আজ সবার সামনে রিমন আমার গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে আমাকে জবাই করে হত্যা করার হুককি দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে মাদককারবারী রিমন ও আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদ শরীফের নেতৃত্বে আমার প্রাণনাশের আশংকা রয়েছে। এবিষয়ে জানতে রিমনের বাবা হাবিব শরীফের মোবাইলে ফোন করলে রিমনের বোন আটঘর হাইস্কুলের শিক্ষিকা বিথি বেগম জানান, আমরা সাংবাদিক আকাশের বাড়ির ভিতরের পথ অনেক আগে থেকে ব্যবহার করে আসছি। আমাদের বাড়ির পিছনের মেইন রাস্তা সংলগ্ন জমি আমার আরেক চাচাতো ভাই জাহিদ শরীফের এবং সেখানে যাতায়াতের যে পথ রয়েছে তা ব্যবহার উপযুক্ত না। আমার বাবা চাচাদের শরীকের জমি তাই আমরা আকাশের বাড়ির ভিতরের পথই ব্যবহার করবো। আকাশকে তার বাড়ির বাউন্ডারী করতে দেয়া হবে না, আমার ভাই রিমন জেলের ভয় করেনা। সে আকাশকে দেখেই ছাড়বে।