ePaper

ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষ/ভাংচুর ও লুটপাট

ব্যুরো চিফ, বৃহত্তর ফরিদপুর

ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দলাদলি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বালিয়া বাজারে প্রায় ৩ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ৮/১০ দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে সংঘর্ষকারীরা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষকলীগ নেতা নুরু মাতুব্বর ও যুবলীগ নেতা জাহিদ মাতুব্বরের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই সুত্র ধরে বুধবার সন্ধার পর থেকে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো, সেই উত্তেজনা থেকে উভয় পক্ষ রাত ৮টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী এই সংঘর্ষে ৮/১০ টি দোকান ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। রাতের বেলা সৃষ্ট সংঘর্ষে সংঘর্ষকারীরা বিক্ষিপ্ত আকারে ছড়িয়ে পরে ফলে পুলিশের পক্ষে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হয়। সংঘর্ষে ফরিদপুর সালথা আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রায় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ হয়ে ছিল। খবর পেয়ে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল ঘটনা স্থলে আসেন। ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নুরু মাতুব্বর ও জাহিদ মাতুব্বর নিজেদের বিএনপি নেতা দাবি করলেও একসময় তারা দুজনেই আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন। কিছুদিন আগেও তারা একসাথে এলাকায় দলপক্ষ পরিচালনা করতো। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের মধ্যে ভাঙন তৈরি হয়। উপজেলা বিএনপির সাথে যোগাযোগ করা হলে নুরু মাতুব্বর ও জাহিদ মাতুব্বর কেউই বিএনপির নেতা নয় বলে জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে জাহিদ মাতুব্বরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিজেকে বিএনপির লোক দাবি করে বলেন, ‘২০১৮ সালের শামা ওবায়েদ রিংকু (বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক) আপার গাড়িতে হামলা করে আওয়ামী লীগের দোসরেরা। তারা আবার এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে আজ বিকেলে আমার সমর্থক বাজারের ব্যবসায়ী মামুন শেখকে (৩৫) মারধর করে। এরপরই মারামারি শুরু হয়। এই মারামারিতে আমার পক্ষের প্রায় ২০ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নুরু মাতুব্বর একটি মামলায় জেল হাজতে থাকায় তার ভাই মুনসুর মাতুব্বর বর্তমানে দলের নেতৃত্ব দেন, তিনি নিজেকে এবং তার ভাই নুরু মাতুব্বরকে বিএনপির লোক দাবি করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজনের সঙ্গে আমাদের মারামারি হয়েছে। যুবলীগ নেতা জাহিদ মাতুব্বর লাবু চৌধুরীর লোক। বিগত দিনে তাদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ ছিলাম। আজ বিকেলে বালিয়া গ্রামে আমাদের পক্ষের সবুর খাঁকে প্রথমে মারধর করে তারা। তারপর মারামারি শুরু হয়। আমার পক্ষের প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত হওয়ায় সংঘর্ষ ঠেকাতে বেগ পেতে হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় দুই পক্ষকে ধাওয়া দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *