প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীরা দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে অনন্য অবদান রেখেছেন এবং তাঁদের স্মৃতি ও ত্যাগ আমাদের প্রেরণার উৎস।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: ইতিহাসের করুণ অধ্যায়
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজের ওপর চূড়ান্ত আঘাত হানে। সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ দেশের শীর্ষ মেধাবীদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল বাঙালির মননশীল ও প্রগতিশীল সমাজকে ধ্বংস করা।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেন যে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সার, সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেন এবং চিকিৎসক ডা. ফজলে রাব্বী। তাঁদের হত্যা বাঙালির ইতিহাসে এক অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্য
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ও প্রগতিশীল দেশ হিসেবে গড়ে ওঠা থেকে বিরত রাখা। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পরাজিত শক্তিগুলো জঘন্য প্রতিশোধ নিয়েছে। তবে তাঁদের ত্যাগ আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস, যা স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আমাদের উৎসাহিত করে।
উন্নত ও সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সুশাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতি রক্ষা এবং তাঁদের আদর্শ বাস্তবায়নই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গঠনের ভিত্তি।
তিনি আরও বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগের জন্যই আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতে সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আহ্বান
ড. ইউনূস দেশবাসীকে আহ্বান জানান স্বাধীনতাবিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিতে। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
এই দিনে জাতি তাঁর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছে এবং তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। তাঁদের আত্মত্যাগের মর্যাদা রক্ষা করা এবং একটি উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়াই হবে তাঁদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন।
আপনি নীচের আরো খবর পড়তে পছন্দ করতে পারেন:
- ভাসানী ছিলেন আপসহীন যোদ্ধা: মির্জা ফখরুল
- মেজর হাফিজ দাদাগিরি করতে গিয়ে প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রকে বিষিয়ে তুলেছে ভারত
- ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসেছি: আসিফ
Share Now