ePaper

প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে সিরাজগঞ্জ

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ

প্রকৃতির অপরূপ সাজে সেজেছে সিরাজগঞ্জ। গাছে গাছে জেগে উঠেছে সবুজ পাতা। মুকুল আর শিমুল ফুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে চলছে বসন্তকাল। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতালে উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে উঠে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। কিন্তু কালের বিবর্তনে সিরাজগঞ্জে ফাগুনে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্ত প্রায়। এক-দেড় যুগ আগেও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায়, পতিত ভিটায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। গাছে গাছে প্রস্ফুটিত শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিত, এসেছে বসন্ত। প্রকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ। জানা যায়, এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সাথে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই নতুন গাছের জন্ম হয়। অন্যান্য গাছের মত এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোন যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইট ভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় শিমুল গাছ রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ। জেলার কামারখন্দ উপজেলার কর্ণসূতি গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হোসেন আলী বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল। এখন আর দেখা যায় না। উল্লেখ্য, বর্তমানে শিমুল তুলা সাড়ে ৪শ’-৫শ’ টাকা কেজি, আর গার্মেন্টেস এর জুট দিয়ে তৈরি তুলা প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকা (তোষক) ১৭০ টাকা (লেপ), কাপাশ তুলা ২৬০ টাকা এবং পজ্ঞের তুলা ২২০ টাকা, ফোম ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে শহরের মৌসুমী হল মার্কেটে লেপ তোষক তৈরিকারক ও বিক্রেতা শাহীন সরকার জানান। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মাদ হোসেন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না। এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলাটা খুবই ভাল এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝতো। তিনি আরও বলেন, আমরা তুলা চাষ বৃদ্ধির জন্য স্বল্প আকারে হলেও তুলা গাছের চারা তৈরি করে জনগণের মাঝে বিতরণ করে থাকি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *