নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই আওয়ামী লীগের, যদি সরকার বা আদালত থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, “আওয়ামী লীগ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার সিদ্ধান্ত মূলত তাদের রাজনৈতিক বিষয়। সরকার বা আদালত যদি তাদের বিরুদ্ধে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে, তাহলে কমিশনের পক্ষ থেকে দলটির নিবন্ধন বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “কিছু শোনা যাচ্ছে যে আদালতে মামলা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়েছে। আদালত যদি কোনো সিদ্ধান্ত দেন, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। তবে, এটি রাজনৈতিক ও আইনি সিদ্ধান্তের বিষয়।”
ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও নির্বাচন প্রসঙ্গে
সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, “নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আমাদের ওপর কোনো বহিরাগত চাপ নেই। আমরা আইন অনুযায়ী কাজ করছি। সংবিধান ও নির্বাচনী বিধি মেনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, “বর্তমানে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে। এতে মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া, ভুয়া ভোটারদের শনাক্ত করা এবং নতুন যোগ্য ভোটারদের নিবন্ধন নিশ্চিত করা হচ্ছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
নির্বাচনের মান উন্নয়নে উদ্যোগ
সিইসি আরও বলেন, “১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের মতো সুষ্ঠু, অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন বিতর্ক থাকলেও এবার আমরা সেই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই।”
সংবিধান সংশোধন এবং প্রস্তাবিত পরিবর্তন
ভোটার হওয়ার বয়স ১৮ থেকে ১৭ বছরে নামানোর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, “এ জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে। যদি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।”
সংখ্যানুপাতিক ভোটের বিষয়ে তিনি বলেন, “এই প্রস্তাব এখনো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। এটি নিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব করা হলে এবং সরকার সেটি অনুমোদন করলে আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।”
নির্বাচনী আস্থা ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা
সিইসি বলেন, “অনেক মানুষ ইলেকশন প্রসেসে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা মনে করে ভোটার হলেও তাদের ভোট কেউ না কেউ দিয়ে দেবে। এ আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
তিনি আরও যোগ করেন, “রাজনৈতিক দলগুলো জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে তারা একটি ফ্রি, ফেয়ার এবং ক্রেডিবল নির্বাচন দেখতে চায়। আমরা তাদের এই লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা করব।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের উপপরিচালক মো. নোমান হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ প্রমুখ।
Share Now