মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী
নরসিংদীর বেলাব উপজেলার আমলাব ইউনিয়ন আশ্রয়ণ প্রকল্প। গত সরকারের আমলে ভূমিহীনদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ৩৫টি সেমিপাকা ঘর। অসহায় ও ভূমিহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়াই ছিলো লক্ষ ও উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য আজ প্রশ্নবিদ্ধ? ভিক্ষুক হাসনে আরা বেগমের ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা। নিজের ঘরে ঢুকতে পারছেন না তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কায্যালয়ের সামনে গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে ঘটনার বর্ণনাদিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেড় বৃদ্ধা ভিক্ষুক হাসনে আরা বেগম। তিনি বলেন ২০২২ সালে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ পেয়েছিলেন হাসনে আরা বেগম নামে ঐ বৃদ্ধা নারী ভিক্ষুক। ২ শতাংশ জমির উপর নির্মিত সেমিপাকা ঘরটি ছিল তার জীবনের নতুন স্বপ্ন। জীবনের বাকী দিনগুলো একটু শান্তিতে কাটাবে এমনটাই প্রত্যাশায় ও খুশিতে সময় পার করছিলেন তিনি। কিন্তু সরকার বদলের সাথে সাথে এই বৃদ্ধা নারীর জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। তার স্বপ্নের ঘরটিতে সোমবার ১৪ এপ্রিল তালা মেরে জোর পূর্ব্বক দখল করে নেয় স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা। ভূমি দস্যু ধুকুন্দী গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানে পুত্র চাঁনু মিয়া, চানু মিয়ার পুত্র বশির, মৃত খালেক এর পুত্র খোকা মিয়া, মৃত মমতাজ উদ্দিনের পুত্র আঙ্গুর ভূইয় ও রুকন উদ্দিন নামে ঐ ভূমি দস্যুরা। এ ঘটনায় ১৪ মে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভিক্ষুক বৃদ্ধা হাসনে আরা বেগম, তিনি আরো বলে আমি অন্যের বাড়ীতে ভিক্ষা করতে গেলে প্রতিবেশী প্রভাব শালী ভূমি দস্যুরা আমার ছেলেকে চুরির অপবাদ দিয়ে মারপিট করে ঘরটি দখল করে নেয়। আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ নির্বাহী অফিসারের নিকট গিয়েও কোন প্রতিকার পাই নি উল্টো কোটি প্রতি প্রতিবেশী আঙ্গুর ভূইয়ার পক্ষেই কথা বলেন স্থানীয় নির্বাহী কর্মকর্তা আর কোটি পতি ও তার আত্নীয় স্বজন দখল করে নেই আমার ঘরটি। আমি ঘরটিতে গেলে দলবলসহ মারপিট করে। তাদের ভয়ে ঘরে ডুকতে পারছিনা প্রায় এক মাস যাবৎ ভিক্ষাকরে অন্যের বাড়ীতে রাত্রী যাপন করতে হচ্ছে আমাকে। আমি আমার ঘরে ঢুকতে ব্যার্থ হয়ে জেলা প্রশাসকের নিটক একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা করি জেলা প্রশাসক আমার উপর ন্যায় বিচার করবে আর ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই দাবী বৃদ্ধা ভিক্ষুকের। এ ছাড়াও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ ঐ ভিক্ষুক নারীর। স্থানীয় দের অভিযোগ শুধু এই ঘরটিই নয়, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের শুরু থেকেই রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। যাদের জমি ও নিজস্ব বাড়ি আছে, তাদেরকে দেয়া হয়েছে ঘর বরাদ্দ। আর অভিযোগের বিষয়ে গ্লোবাল টিভি’র নরসিংদীর জেলা প্রতিনিধি সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে, পালিয়ে যান অভিযুক্তরা। এবিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি আমার জানানেই ভিক্ষুকের ঘর দখল বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখ জনক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ধুকুন্দিতে ৮টি ঘর ও আব্দুল্লাহ নগরে রয়েছে ২৭টি ঘর। এর মধ্যে দুটি ঘরে শুরু থেকেই ঝুলছে তালা। বরাদ্দ বাতিল করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে যেন এই ঘরগুলো বিতরণ করা হয় এমনটাই দাবি স্থানীয় ভূমিহীনদের।