নবীনগরে শুধু রুটিন দায়িত্ব পালন করেন না ইউএনও

হেলাল উদ্দিন (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) নবীনগর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী নবীনগর উপজেলায় যোগদান করেন গত বছরের ২৪ অক্টোবর। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দাবী আদায়ে রাজপথ যখন অশান্ত এবং অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা যখন নিজেকে রুটিন জবের মাঝে সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন ঠিক সেই উত্তাল সময়ে নবীনগরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে এলেন জনভোগান্তি নিরসনে। সিন্ডিকেট ভেঙে নবীনগরের আলীয়াবাদ হতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাউতলী পর্যন্ত সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ভাড়া কমাতে তিনি গণশুনানী নিলেন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই রুটে ন্যায্য ভাড়ায় বাস সার্ভিস চালু করেন ইউএনও। জনগণের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি নিরসন হলো এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে। যোগদানের মাত্র ০৭(সাত) দিনের মধ্যে চালু করেন আশুগঞ্জ-নবীনগর সড়কের নির্মাণ কাজ। জন ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বুয়েটের প্রকৌশলী ইউএনও রাজীব চৌধুরী ব্যক্তিগত সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথকে এককথায় বাধ্য করেন রাস্তার নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু করতে। দাপ্তরিক চিঠি চালাচালির বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত সম্পর্ক আর আন্তরিকতা সহকারে জনগণকে সেবা দেয়ার প্রচেষ্টা এভাবেই অব্যাহত রেখেছেন তিনি। নবীনগর পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে পৌর এলাকার যানজট নিরসনে নিয়োগ করেছেন ইউনিফর্মধারী ২০ জন ভিডিপি যারা প্রতিদিন কাজ করছেন পৌর এলাকার যানজট নিরসনে। কলেজ রোডের (বাইপাস রোড) কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। পৌর এলাকার যানজট নিরসনে রাস্তাটি মাইল ফলক হবে। নবীনগরের বুড়ি নদীর তীর পরিণত হয়েছিল ভাগাড়ে। প্রশাসক হিসেবে তিনি নদীর পাড়ের আবর্জনা পৌরসভার ডাম্পিং স্পটে স্থানান্তর করে পাড় জুড়ে ডাস্টবিন সরবরাহ করেছেন। স্থাপন করেছেন নদী রক্ষা সংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক ব্যানার। পুরো নদীর পাড়কে নিয়ে এসেছেন ২০ টি সিসি ক্যামেরার আওতায়। বুড়ী নদী ধীরে ধীরে ফিরে পাচ্ছে তার নির্মল পরিবেশ। ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন যে, শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফেরাতে আমরা গঠন করতে যাচ্ছি মেধা বিকাশ পরিষদ, মাধ্যমিক হতে কলেজ পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন হতে চালু করা হবে ভূমি বিষয়ক ব্যাসিক কোর্স। দক্ষ মানব সম্পদ গড়তে সকল মাদ্রাসায় প্রতিষ্ঠা করা হবে আরবী ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব। ইতোমধ্যে ৩ (তিন) টি মাদ্রাসায় ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরীর ৭ মাসের কর্মকাল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, তিনি রুটিন জবের বাইরে উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে জনকল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছেন এবং প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগের বদলে ভরসা রেখেছেন কমিউনিটি বহমধমবসবহঃ এর উপর। আমরা নবীনগরের উদ্যোগী- উদ্যমী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সাধুবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *