ePaper

নবীনগরে ঠিকাদার পলাতক এক বছরের কাজ শেষ হয়নি ৪ বছরেও

হেলাল উদ্দিন, নবীনগর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভায় (প্রথম শ্রেণি) আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার সাপ্লাই নির্মাণের কাজ গত চার বছরেও শেষ হয়নি। এতে নিরাপদ পানি পাচ্ছে না পৌরবাসী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়াটার সাপ্লাই নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন আওয়ামীপন্থী ঠিকাদাররা। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকে পলাতক ঠিকাদাররাও। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফিলিপাইনভিত্তিক ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্প শুরু হয়। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে কাজটির কার্যাদেশ (ওয়ার্ক অর্ডার) পায় এনপিআইএল কম্পাউন্ড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন ও মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভি নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত সাপ্লাইয়ের নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি। তবে ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসার উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘শুধু মিটার সংযোজনের ১০ শতাংশ কাজ বাকি আছে। যেটি জুনেই শেষ হবে। আশা করি, জুন থেকেই এই প্রকল্প থেকে নিরাপদ পানি পাবে পৌরবাসী। ওয়ার্ক অর্ডার অনুয়ায়ী, প্রকল্পের আওতায় পৌর এলাকার ১৮ দশমিক ৯ কিলোমিটার অংশে পানি সরবরাহের জন্য পাইপলাইন স্থাপন এবং প্রায় চার হাজার হাউস কানেকশন ও ১২টি স্ট্রিট হাইড্রেন্ট স্থাপনের কথা রয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে আট কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ বিষয়ে কথা বলতে কার্যাদেশ পাওয়া দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের মোবাইলে কল করা হয়। তবে তাদের ব্যবহৃত ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পটির কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠান এনপিআইএল কম্পাউন্ড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের মালিক নজরুল ইসলাম। তার বাড়ি গাজীপুর জেলায়। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে নজরুল ইসলাম। এদিকে অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তানভীর আহমেদ জেভির মালিক শামীম আহমেদ। নজরুল ইসলাম আত্মগোপনে যাওয়ার পর তাকেও আর কাজে দেখা যায়নি। স্থানীয় একটি পক্ষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করে আসছে, কাজ না করেই প্রকল্পটি থেকে আড়াই কোটি টাকা তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি। তবে অভিযোগটি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাসার উল্লাহ। তিনি দৈনিক নবচেতনাকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পের একটি টাকাও উধাও হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রকল্পটির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। আমার জানা মতে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটি এখন পর্যন্ত বরাদ্দের ৩০ শতাংশ টাকা তুলেছে।’ নবীনগর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী দৈনিক নবচেতনাকে বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রকল্পটির আপডেট জানতে চাইব। কোনো প্রকার অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *