হেলাল উদ্দিন নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি :-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক ও দুই টাকার কয়েন বাজারে মালামাল ক্রয়- বিক্রয়ের ক্ষেত্রে এখন আর আদান প্রদান হয় না। নবীনগর উপজেলায় এক ও দুই টাকার কয়েন যেন অচল। অথচ পাশের উপজেলায় এ কয়েন নিয়ে কোন সমস্যা নাই। কেন নবীনগরে ব্যবসায়ীরা এ সব কয়েন নিচ্ছেন না, সরকারি কোন প্রজ্ঞাপন আছে কি না? এই নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পৌর এলাকার বাসিন্দা চা-বিক্রেতা ফারুক মিয়া বলেন- “দোকানে লেনদেন করতে গিয়ে আমার কাছে এক ও দুই টাকার অনেক কয়েন জমা হয়েছে। সে গুলো আমার কোন কাজে আসছ না, নবীনগরে কোনো দোকানে কয়েন দিতে গেলে কেউই নিতে চান না, ব্যাংকেও নিতে চায় না”। একই রকম অভিযোগ করেন নবীনগর সরকারি হাই স্কুল মার্কেটের দোকানি কামরুল হাসান ইকরাম। তিনি বলেন – “ নবীনগরের কোনো বাজারেই ক্রেতা-বিক্রেতা এক ও দুই টাকার কয়েন নিতে চান না। নবীনগরের বাইরে এ সব কয়েন লেনদেন হয়, এই সমস্যার পরিত্রাণ চাই”। নবীনগরের বাজার গুলোতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে একই রকম তথ্য পাওয়া যায়। এখানে দুই টাকার কাগজের নোটের লেনদেন স্বাভাবিক। এমনকি পাঁচ টাকার কয়েন নিয়েও কারও আপত্তি নেই। শুধু এক ও দুই টাকার কয়েন অচল! কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ছোট ব্যবসায়ীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। নবীনগর বাজারের একাধিক ক্রেতা বললেন- কয়েনের লেনদেন না হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা কারণ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের এক ও দুই টাকা ছেড়ে যেতে হচ্ছে। আর এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় এ অনিয়মটি ধীরে ধীরে নিয়মে পরিণত হচ্ছে। অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েন গুলো নেওয়া হয় না। এ বিষয়ে নবীনগর সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার ও ম্যানেজার আশিক কায়সার বলেন- “বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব ব্যাংকের ভল্টে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক কয়েন জমা রাখার নিয়ম আছে। আমরা কয়েন নিচ্ছি এবং দিচ্ছি, গ্রাহকদের সাথে লেনদেন করার জন্য আমাদের ব্যাংকে পর্যাপ্ত কয়েন জমাও আছে। আমার জানামতে নবীনগর অন্যান্য ব্যাংক গুলোতেও পর্যাপ্ত কয়েন রয়েছে “। কয়েন লেনদেন করতে সরকারি কোন নিষেধাজ্ঞা নেই বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী বলেন- “এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এক ও দুই টাকার কয়েন/মুদ্রা লেনদেনে অনীহা রয়েছে, নবীনগরের ব্যাংক গুলোতেও ধাতব মুদ্রা না নেওয়ার কথা শুনেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সরকারি অনুমোদিত মুদ্রা লেনদেনে অচল বলা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তফসিলি ব্যাংক গুলোর ম্যানেজারদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে প্রশাসনিক প্রদক্ষেপ নিব”।