নওগাঁ প্রতিনিধি
পরান পাখি উড়ি উড়ি/আপন মানুষ চেনা বড়ো দায়/সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে/বারে বারে আর আসা হবে না সহ বেশ কিছু লালন ও বাউল গানের সুরে মেতে উঠেছিল আখড়া বাড়ি। শনিবার নওগাঁ শহরের বাইপাস সংলগ্ন কোমাইগাড়ী মহল্লার বাউল আখড়া বাড়ীতে সংগীত প্রতিযোগীতা হয়। যেখানে বাউল আখড়া বাড়ী ও রংধনু মিউজিক্যাল ব্যান্ডের উদ্যোগে সংগীত প্রতিযোগীতা শিল্পী বাছাই করা হয়। সকাল ১০ টা থেকে বাউল আখড়া বাড়ী প্রাঙ্গনে প্রতিযোগীদের আগমণে প্রাণচাঞ্চল হয়ে উঠে। আগতরা যে যার মতো গানের ট্রায়াল দেন। মঞ্চে একে একে প্রতিযোগীদের ডেকে গান শুনেন বিচারকরা। গানের বিচার করে ইয়েস কার্ড দেয়া হয় প্রতিযোগীদের। তার আগে সংগীত প্রতিযোগীতা অংশ নিতে প্রতিযোগীদের আবেদন ফরম পুরণ করে জমা দিতে হয়। আয়োজকরা জানান-নওগাঁর শিল্পীদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রম সংগীত প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে শুধুমাত্র জেলার শিল্পীরা অংশ নিয়েছে। প্রায় শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নিয়ে নিজেদের প্রতিভা প্রকাশ করছে। আগামী দুইমাস ব্যাপী এই অডিশন চলবে। প্রাথমিক পর্যায়ে বাছায় করে ইয়েস কার্ড প্রদান করা হয়। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে তাদের মধ্য থেকে বাছাই করা হবে। শেষে চুড়ান্ত রাউন্ডে শিল্পী বাছাই করে সম্মাননা প্রদান করা হবে। নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীগাথি গ্রামের বেবী আক্তার বলেন, আমি শৈশব থেকেই মুলত লালন গানের চর্চা করি। আমি কখনো এমন প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়নি। অনেকে শুরুতেই বাদ পড়েছে। সেখানে আমি এই প্রথম এখানে অংশ নিয়ে ইয়েস কার্ড পেয়ে আবেগে আল্পুত। আমার আশা আরো বড় কোন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিজয়ী হবো। আমার প্রতিভাগুলো প্রকাশ করতে পারবো। বিচারক বিশিষ্ট বাঁশী বাদক জালাল আহমেদ বলেন, নওগাঁয় অনেক শিল্পী আছে। এ জেলায় বড় বড় শিল্পীর জন্ম। অনেকেই প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাইনা। এ প্রতিযোগীতার মাধ্যমে অনেক শিল্পী উঠে আসবে। যারা সারা বাংলাদেশে উঠে আসে। বাউল আখড়া বাড়ীর উপদেষ্টা এনামূল হক বলেন, আমাদের আনাচে কানাচে অনেক শিল্পী ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এই প্রতিযোগীতার মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে তাদের প্রতিভা প্রকাশ করা হবে। প্রতিভা থাকলেও অনেকে প্রকাশ করতে পারে না। এই প্রতিযোগীতার মাধ্যমে তারা নিজেকে তুলে ধরণে পারবে। যারা ইয়েস কার্ড পাবে তারা সামনে এগিয়ে যাবে। আশা করা যায় এর মাধ্যমে দেশে নওগাঁর শিল্পীদের আরো পরিচিতি বাড়বে। এসময় উপস্থিত ছিলেন নওগাঁর জনপ্রিয় কিসসা-কাহিনী শিল্পী সাইদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শিল্পী সুরাইয়া বেগম।