মোয়াজ্জেম হোসেন, নওগাঁ
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব বিশরী বা মনসা পূজা। প্রতিবছরের ন্যায় বাংলা শ্রাবণ মাসের শেষ তারিখে দেবত্র বিষয়ক জিম্মাদার যুগলদেবনাথ এর আয়োজনে নওগাঁর মহাদেবপুরের রোদইল গ্রামে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেদির পাশে বিভিন্ন বাহারী রঙের ১০০ ডালা সাজিয়ে এই পুজা পালন করেন রোদইল গ্রামের সনাতন ধর্মীয়রা। হিন্দু ধর্মমতে মনসা হচ্ছে সাপের দেবী। এ দেবীর পূজা করলে ঘর-বাড়ি বিষাক্ত সাপ হতে রক্ষা পায়। মনসা পূজায় আগে প্রায় একমাস ধরে এ পুঁথি পাঠ করেনো হতো হিন্দু ধর্মালন্বীদের। সাধারণত ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল করে গানের সুর করে পুঁথি পাঠ করা হয়েছিল। গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানেও বিশেষভাবে পুঁথি পাঠের আয়োজন করা হতো। তারা দুধ-কলা ও ফলমূল দিয়ে দেবীর পূজা করেন। সাধারন সম্পাদক ধীরেন দেবনাথ বলেন দেবত্র বিষয়ক জিম্মাদার যুগলদেবনাথ এর নেতৃত্বে প্রতিবছর গ্রামের সবাই মিলে এই পুজা পালন করা হয়। মুলত এই পুজা করা হয় ঘর-বাড়ি বিষাক্ত সাপ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য। সদস্য কমল, নিমাই বলেন জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে হিন্দু সম্প্রদায় দেবী মনসার পূজা আষাঢ-শ্রাবণ মাসে পালন করে। বর্ষার প্রকোপে এ সময় সাপের বিচরণ বেড়ে যায়, তাই সাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভক্তকূল দেবীর আশ্রয় প্রার্থনা করে। এছাড়া ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতির জন্য সর্পদেবীর ভক্ত তার দ্বারস্থ হয়। মনসা একজন লৌকিক দেবী। তবুও তার অসাধারণ জনপ্রিয়তার কারণে হিন্দু সমাজের সকল সম্প্রদায় তাকে দেবী হিসেবে মর্যাদা দেয়। পুজা করতে আশা ৮০ বছরের মিনতি রানী বলেন শতশত বছর ধরে এই পুজা ধারাবাহিক ভাবে ডালা সাজিয়ে করে আসছি। ক্উে যদি পুজায় এসে ডালা ছেড়ে যায় তাকে সাপে দংশন করবে। এজন্য পুজা শেষে সকল ডালা সতর্কতার সহিত নিয়ে যাওয়া হয়। দেবত্র বিষয়ক জিম্মাদার যুগলদেবনাথ বলেন ৫০ এর অধিক ফলমুল ও দুধ দিয়ে এই পুজা করা হয়। আমার আয়োজনেই গত কয়েকবছর ধরে এই গ্রামে পুজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। আজকে ও ভক্তদের অঞ্জলি প্রদান ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে পূজা সমাপ্ত হবে। পুজায় লিপি রানী, সীমু সহ গ্রামের সকল পুজা ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন।
