ePaper

নওগাঁয় চাকরি হওয়ার পর স্ত্রীকে অস্বীকার স্বীকৃতি চেয়ে সংবাদ সন্মেলন

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় সরকারি চাকরি হওয়ার পর প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে খালাতো বোনকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারি সোহেল রানা চয়েনের বিরুদ্ধে। দেড় বছর আগে গোপনে তালাক দেয়ার পরও সংসার করে অস্বীকার করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী নারী মৌসুমী খাতুন। গতকাল বুধবার দুুপুরে নওগাঁ শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ভুক্তভোগী মৌসুমী খাতুন শহরের কোমাইগাড়া (কাটিয়াপাড়া) মহল্লার মনছুর আলীর মেয়ে। অভিযুক্ত সোহেল রানা চয়ন একই এলাকার মমিনুল ইসলামের ছেলে। সোহেল রানা নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁপানিয়া-বক্তারপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মৌসুমী খাতুন বলেন-২০২২ সালের ২৫ মার্চ সোহেল রানা চয়নের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সেসময় আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকারসহ নগদ দুই লাখ টাকাও দেয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা মিলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের শিকার হয়ে একাধিকবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় আমাকে তালাকসহ হত্যার হুমকি দেয়া হতো। তারপরও সকল অন্যায় ও নির্যাতন সহ্য করে দুই বছর সংসার করে আসছিলাম। এরপর আবারও নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে বড় বোনের বাড়ি গিয়ে আশ্রয় নিয়। এর কিছুদিন পরে স্বামী সোহেল রানা আবারো যোগাযোগ করে এবং তার ভুল হয়েছে স্বীকার করে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়। মৌসুমি আরো বলেন, সোহেল রানা চাকরি পেলে আলাদা ভাবে সংসার শুরু করবে এই আশ্বাসে আমার ফুফুর বাসায় এবং বোনের বাসায় এসে আমরা গোপনে এক বছর সংসার করি। আর বিষয়টি তার পরিবারের কাছে গোপন রাখতে বলে। এরই মাঝে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তারা আমার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে দেয়। সোহেল রানা ভূমি অফিসে চাকরির জন্য আমার বাবা এবং বোনের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে দিয়। এর কিছুদিন পরে ভূমি অফিসে অফিস সহকারি পদে তার চাকরি হয়। চাকরি পাওয়ার পর থেকে আমার সাথে বৈরী আচরণ শুরু করে। এর মাঝে জানতে পারি খালাতো বোনকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। বিষয়টি জানার পর খোঁজ নিতে বড় বোনকে সাথে নিয়ে স্বামী সোহেল রানার বাড়ি গেলে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ দেড় বছর আগে তালাক দিয়েছে বলে জানান। ২৩/০৭/২০২৩ সালে আমাকে তালাক দেয়ার কথা বললেও ১২/১০/২০২৪ সাল পর্যন্ত শারীরিক সম্পর্কসহ সংসার করে। আর সংসার করার সুবাদে গহনা, আসবাবপত্র ও নগদ টাকাসহ এ পর্যন্ত মোট ৭ লাখ টাকা তাকে দিয়েছি। স্বামীর সংসারে ফিরে যাবার জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে কোন উপায় না পেয়ে আদালতে দুটি মামলা করেছি। কিন্তু তার বড় ভাই নয়ন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এবং ডিসি অফিসে চাকরি করে এমন পরিচয় দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে আসছেন। তাই দ্রুত প্রশাসনের কাছে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে সঠিক বিচারের দাবি করছি। অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সোহেল রানা চয়ন বলেন, মৌসুমী খাতুন স্ত্রী ছিল। অনেক আগেই তাকে তালাক দিয়েছি। আদালতে মামলা করেছে বলে জেনেছি। এখন আদালতের মাধ্যমেই বিষয়টি সমাধান করা হবে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সঠিক নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *