দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ২৫ মে দুপরে ইউনিয়ন পরিষদের ১০০ গজের মধ্যে হাসিমের গোডাউনে থেকে শতাধিক বস্তাভর্তি ভিজিএফ চাল ও টিসিবি’র পন্য আটক করে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে হাসিমসহ ২জনকে আটক করে কোতয়ালী থানায় প্রেরন করে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে সু-কৌশলে তাদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নেয় একটি চক্র। এমনকি পত্র-পত্রিকায় সংবাদ বন্ধ করতে ম্যানেজ করে সাংবাদিকদের। ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হানিফ আলী বলেন, গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখের পর থেকে নির্বাচিত সদস্য ও সদস্যাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে সাবেক মেম্বার আমির আলী। ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোছাঃ কুসুম যুব মহিলা লীগের সভাপতি এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এর মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও প্যানেল চেয়ারম্যান কুসুম যোগসাজস করে ইউনিয়ন পরিষদের সরকারী বরাদ্দকৃত মালামাল আত্মসাত করে আসছে। ইউনিয়ন পরিষদে সরকারী বরাদ্দকৃত মালামাল আসামাত্রই সাবেক মেম্বার আমির আলীসহ তারা নানা কুট কৌশল অবলম্বন করে। গত ঈদুল ফিতরে টাকা নিয়ে ভিজিএফ’ কার্ডের বিতরনে অনিময়ের অভিযোগ উঠে। এবারও পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে বিতরনকৃত ভিজিএফ থেকে বঞ্চিত হয়েছে অনেক অসহায় হত-দরিদ্র উপকারভোগী নারী ও পুরুষ। রেজুলেশন খাতায় মেম্বারগনের স্বাক্ষর করলেও ভিজিএফ বিতরনের সময় অজ্ঞাত কারনে বেশীরভাগ মেম্বারগন অনুপস্থিত ছিলেন। বিতরনের সময় অনুপস্থিত মেম্বারগন যথাক্রমে মো. হানিফ আলী, জীবন কুমার রায়, নাজির হোসেন, শিরিন আকতার, আয়েশা সিদ্দিকা ও সমাজ উদ্দিন মিলে ৭ জন। মেম্বারগন জানান, ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আমির আলী বলেছেন, ইউনিয়ন পরিষদে ঢুকতে পারবো না, বিলি করতে পারবো না। সাবেক মেম্বার আমির আলীকে নিয়ে পরিষদ চালাচ্ছে। আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের ৭ জন মেম্বারের বিরুদ্ধে করেছে ভুয়া মানববন্ধন। খোজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষ্যে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নে ৯, ১২৬টি ভিজিএফ কার্ডের সিদ্ধ কাটারী চাল বরাদ্দ আসে। গত ২৪ ও ২৫ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ চত্তরে বিতরন করা হয় ভিজিএফ চাল। কার্ডধারী এক সদস্য বলেন, তিনি একাই ৩টি ভিজিএফ কার্ডের ৩০ কেজি চাল উত্তোলন করার পর ৩৫ টাকা কেজি দরে বেচে দিয়েছি। অপরজন তার সুরে তাল মিলিয়ে বলছেন, তিনিও চাল উত্তোলনের পর বেঁচে দিয়েছেন। আবার কেউ বলছেন সিদ্ধ কাটারী চাল খাওয়ার উপযোগী না হওয়ায় তিনি বেচে দিয়েছেন। স্থানীয়রা লোকজন বলছেন, বিতরনকৃত ভিজিএফ’র চালগুলো কিনছে ৪/৫ জন লোক। সরজমিনে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার জনৈক ব্যাক্তির গোডাউনে প্রায় শতাধিক ভিজিএফ চালের বস্তাসহ টিসিবি’র পন্য দোকানে দেখতে পাওয়া যায়। ভিজিএফ’র চাল বিষয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি মেম্বারদের স্বাক্ষরযুক্ত রেজুলেশন খাতা দেখিয়ে বলেন সকলের উপস্থিতিতে বিতরন করা হয়েছে। কিন্তু বিতরনের সময় সকল ইউপি’র সদস্য/সদস্যাদের কোনো ছবি বা ভিডিও দেখাতে পারেনি। সাতজন ইউপি’র সদস্য অভিযোগ করে বলেন, সাবেক মেম্বার আমির আলীর লোকজন প্রশাসনিক কর্মকর্তার সহযোগীতায় সন্ত্রাসী কায়দায় স্বাক্ষর নিলেও ভিজিএফ কার্ড দেওয়াতো দুরের কথা বিতরনের সময় থাকতে পর্যন্ত দেয়নি। এবিষয়টি অত্র এলাকায় টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
