মোহাম্মদ আলী,ভোলা
দিনটি ছিল ৪ আগস্ট ২০২১। তখন ভোলা জেলা ছিল সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের ভাতিজাদের নিয়ন্ত্রণে ভয়ঙ্কর এক ত্রাসের জনপদ। সাংবাদিকদের তিনি ভাবতেন গৃহপালিত। কিন্তু কেউ যদি তার দৌরাত্ম্য ও অপকর্ম প্রকাশ করতেন, তবে তার উপর নেমে আসত ভয়াবহ নির্যাতন। এমনই এক ঘটনায় সেদিন দিঘলদী ও বাংলাবাজারে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে হামলার শিকার হন তরুণ সাংবাদিক দাউদ ইব্রাহিম ও এটিএন নিউজের সাংবাদিক ফরিদুল ইসলাম। নারী নির্যাতন ও দুর্নীতির চিত্র সংগ্রহ করতে গিয়েই তারা পড়েন তোফায়েল আহমেদের ভাতিজা স্বপন, মিলন ও বাচ্চু নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হাতে। অভিযোগ অনুযায়ী, দুই সাংবাদিককে নির্মমভাবে পিটিয়ে অচেতন করা হয়, পরে হত্যা ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়। পথচারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে তাদের প্রাণ বাঁচে। কিন্তু এখানেই শেষ হয়নি নির্যাতনÑউল্টো তাদের বিরুদ্ধে ভোলা থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। সাংবাদিক দাউদ ইব্রাহিম জানান, “তোফায়েলের আত্মীয় নামধারী গুন্ডারা আমাকে এমনভাবে নির্যাতন চালিয়েছে যে আজও সেই ক্ষত বহন করছি।” শুধু তাই নয়, পরবর্তী সময়ে তার পরিবারও একাধিকবার হামলার শিকার হয়। তার বাবা, মা, ভাই ও স্ত্রীকে প্রকাশ্যে হত্যাচেষ্টার অভিযোগও ওঠে। হামলায় তার স্ত্রীর হাত ভেঙে যায়। অভিযোগ রয়েছে, দাউদ ইব্রাহিমদের পৈতৃক জমি জোরপূর্বক দখল করে সেখানে আস্তানা গড়ে তুলেছে তোফায়েল বাহিনী। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ওই স্থাপনায় এখনো রাষ্ট্রবিরোধী গোপন বৈঠক হয়, এমনকি জলদস্যুরাও সেখানে আশ্রয় নেয়। এলাকাবাসীর আশঙ্কাÑএসব আস্তানা ভেঙে না দিলে সাধারণ মানুষের জীবন ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই তারা প্রশাসনের কাছে সন্ত্রাসীদের চক্র ভেঙে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
