জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখায়। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে ঢালাও দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৩০৫টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ২৬টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৮৪টির দাম কমেছে এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৬৭টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২১টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৮৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৫২ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৭৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪০০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫০ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৯ কোটি ২৪ লাখ টাকার। ২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সিটি ব্যাংক, ই-জেনারেশন, এমজেএল বাংলাদেশ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইটি কনসালটেন্ট এবং মালেক স্পিনিং। অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২০২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
