ePaper

ঠাকুরগাঁওয়ে মিলন হত্যার বিচারের দাবিতে গ্রামবাসীর সড়ক অবরোধ

মো. মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও

মিলন হোসেন (২৩) হত্যার বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধে স্থবির হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। গতকাল রোববার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা ঠাকুরগাঁও চৌরাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ ও শোলগান দিতে থাকে। এর ফলে, শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে ঠাকুরগাঁও রোড পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। পরে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গ্রামবাসীরা জড়ো হলে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা তাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে গ্রামবাসী বাড়ি ফিরে যায়। এ সময় ডিসি ইশরাত ফারজানা গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বিচারপ্রক্রিয়া সুষ্ঠ হওয়ার জন্য ধৈর্য ধারণ করুন। মিলন হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেনো নিশ্চিত কর যায় সে বিষয়ে প্রশাসন সব রকম সহযোগিতা করবে। এদিকে মিলন হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৫ দিনে ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার মহেশপুর গ্রামের সেজান আলী (২৫), তার মা শিউলি বেগম, একই উপজেলার আরাজি পাইকপাড়া গ্রামের মুরাদ ওরফে নাসিম (২৫), সেজানের ভাগ্নে মহেশপুর গ্রামের মনিরুল হক (১৭) ও সেজানের ভাগনি পৌর শহরের তেলিপাড়া মহল্লার রত্না আক্তার ইভা (১৯)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক নবিউল ইসলাম জানান, হত্যায় জড়িত সেজান, মুরাদ ও ইভাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে তোলা হবে।

বিখোভে অংশ নিয়ে মিলনের মা সাবিনা বেগম ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেন, “আমার বুকের মানিককে যারা কেড়ে নিয়েছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই। আমার ছেলের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমি রাস্তায় থাকব।”মিলনের ভগ্নিপতি রবিউল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার চাই। ৯০ দিনের মধ্যে যদি বিচার না হয়, তাহলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।” স্থানীয় বাসিন্দা রহিম মিয়া বলেন, “মিলন খুব ভালো ছেলে ছিল। যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।”উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছন থেকে নিখোঁজ হন মিলন হোসেন। অপহরণকারীরা মিলনের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। মিলনের বাবা পাঞ্জাব আলী জানান, ৯ মার্চ মুক্তিপণ হিসেবে ২৫ লাখ টাকা দিলেও তার ছেলের খোঁজ মেলেনি। পরে, গত বুধবার রাতে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর গ্রামের সেজান আলীর বাড়ির পরিত্যক্ত টয়লেটের স্ল্যাব থেকে মিলনের লাশ উদ্ধার করে জেলা ডিবি পুলিশ। মিলন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার পাঞ্জাব আলীর ছেলে। তিনি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) বিএসসি-তে ভর্তির জন্য গাজীপুরে একটি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *