ePaper

জেলেনস্কি চাইলে মুহূর্তেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন: ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাইলে মুহূর্তের মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন। তবে এজন্য ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়ার আশা ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের স্বপ্ন ত্যাগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবার স্থানীয় সময় নিজের মালিকানাধীন ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি চাইলে মুহূর্তের মধ্যেই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন, অথবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ওবামার আমলে হারানো ক্রিমিয়া আর ফেরত পাওয়া যাবে না, আর ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়াও সম্ভব নয়। কিছু জিনিস কখনোই বদলায় না! গতকাল সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। তার আগেই জেলেনস্কির ওপর চাপ সৃষ্টি করলেন তিনি। ট্রাম্প জানান, মস্কোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দিতে দেওয়া হবে না এবং রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়া পুনর্দখলের সুযোগও দেওয়া হবে না। এই পোস্ট দেওয়ার এক মিনিট পরই ট্রাম্প আবার লেখেন, একসঙ্গে এতজন ইউরোপীয় নেতাকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানানো তার জন্য ‘অনেক সম্মানের’। এদিকে, দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ট্রাম্পের এ পোস্ট ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার মতো পরিস্থিতি ফের তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে। তবে জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্মিলিত শক্তি রাশিয়াকে শান্তির পথে আনতে বাধ্য করবে। বৈঠকে যোগ দিতে তিনি ইতোমধ্যে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন। শুক্রবার প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। সেখানে যুদ্ধ বন্ধের শর্ত হিসেবে পুতিন দনবাসের পুরো দোনেৎস্ক অঞ্চল দাবি করেছেন বলে দ্য গার্ডিয়ানের একটি সূত্র জানিয়েছে। এরপর ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি যদি দোনেৎস্ক অঞ্চলের পুরোটা ছেড়ে দেন, তাহলে একটি শান্তিচুক্তি সম্ভব হতে পারে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি একটি চুক্তি করা উচিত। কারণ, রাশিয়া একটি বড় শক্তি, ইউক্রেন তা নয়। অনেক গণমাধ্যম আলাস্কা সম্মেলনকে পুতিনের বিজয় এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের জন্য অপমান হিসেবে উপস্থাপন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। তবে তিনি দাবি করেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় ‘বড় অগ্রগতি’ অর্জন করেছেন, যদিও এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। দ্য গার্ডিয়ান আরও জানায়, সোমবারের বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করবেন এবং ভূখণ্ড বিনিময় পরিকল্পনার বিরোধিতা করবেন। একই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য যে কোনো সমঝোতায় ওয়াশিংটন কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে তা জানতে চাইবেন তারা। রাশিয়াও কিয়েভের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছেন ভিয়েনাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থায় নিযুক্ত রুশ প্রতিনিধি মিখাইল উলিয়ানভ। তিনি বলেন, কিয়েভের পাশাপাশি মস্কোরও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার আছে। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ সিএনএনকে বলেন, ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। ন্যাটোতে সরাসরি যোগ দিতে না পারলেও ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো অনুচ্ছেদ-৫-এর মতো ভাষা ব্যবহার করতে পারবে বলে জানান তিনি। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জোটের কোনো সদস্য দেশ আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *