জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভাগ্য বর্তমানে চরম সংকটে পড়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে গত কয়েক বছর ধরে লিবারেল পার্টি ক্ষমতায় রয়েছে, তবে সম্প্রতি তিনি নিজ দলের এবং জনগণের সমর্থন হারাতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি, কানাডার উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন, যা ট্রুডোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতি ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে অনেকটাই অনিশ্চিত করে দিয়েছে।
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগ এবং সরকারের সংকট
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে। তিনি ট্রুডোর সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেন, বিশেষ করে আমদানি শুল্ক আরোপ এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে। ট্রাম্পের আমদানি শুল্কের ঘোষণা কানাডার অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে ফ্রিল্যান্ড আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এতে করে কানাডার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে ওঠে এবং ট্রুডোর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে।
পার্টির ভিতরে বিভক্তি এবং চ্যালেঞ্জ
ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর, ট্রুডোর নিজ দল লিবারেল পার্টি থেকেও একাধিক ব্যক্তি তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। ২৪ জন এমপি একটি চিঠিতে সই করেন, যাতে ট্রুডোর পদত্যাগের পক্ষে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এর ফলে, ট্রুডোর নেতৃত্বের প্রতি দলের ভিতরে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এর সাথে, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জগমিৎ সিংও ট্রুডোর পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন, যা তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে আরো চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে।
অনাস্থা ভোট এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
জাস্টিন ট্রুডো যদি পদত্যাগ না করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হয়, তবে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে, যদি পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট না হয়, তাহলে ট্রুডো তার পদে থাকা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করতে পারেন। তবে, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজন অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। রক্ষণশীল দল এবং নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরোধী অবস্থান, ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যতকে বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
কানাডায় সম্ভাব্য নির্বাচনের প্রভাব
বর্তমান পরিস্থিতিতে, যদি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে বিরোধী রক্ষণশীল দল বড় জয় পেতে পারে। জরিপে উঠে এসেছে, ট্রুডোর দলের সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে, যা পরবর্তী নির্বাচনে লিবারেল পার্টির জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে।
শেষ কথা
জাস্টিন ট্রুডো যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তাঁর সামনে একটি কঠিন পথ রয়েছে। পদত্যাগ, অনাস্থা ভোট, কিংবা পার্লামেন্ট স্থগিত করার মতো যে কোনো সিদ্ধান্ত তাঁর ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে। কানাডার জনগণ আগামী নির্বাচনে তার নেতৃত্বে থাকা নাকি পরিবর্তন চায়, তা জানতে অপেক্ষা করছে।
Read Next News below
আফগানিস্তানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা: ৫২ জন নিহত ও ৬৫ জন আহত
Share Now