মোহাম্মদ আলী, ভোলা
নিজের সন্তান ও পুত্রবধূর নির্যাতনের শিকার হয়ে মানবিক সুবিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিণী। গতকাল সোমবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছর বয়সী নুর নাহার বেগম। সংবাদ সম্মেলনে নুর নাহার বেগম অভিযোগ করেন, তার স্বামী মৃত্যুবরণের পর থেকেই বড় ছেলে মিজান ও তার স্ত্রী রেহেনা বেগম তাকে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। তিনি জানান, “আমাকে খাওয়া-দাওয়া, চিকিৎসা কিছুই দেয় না। ঘরের দরজা বন্ধ করে একাধিকবার মারধর করেছে, এমনকি ঘর থেকেও বের করে দিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমার ছোট ছেলে রিয়াজকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় মিজান। পূর্বে এ বিষয়ে মামলা করলে আদালতের শর্তে সে জামিনে মুক্তি পায়। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার পর আবারও আমাকে জুতা দিয়ে মারে এবং রিয়াজকে খুনের হুমকি দেয়।” নুর নাহার বেগম জানান, এ ঘটনার পর তিনি দৌলতখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পুলিশ উভয় পক্ষকে ডেকে ১৫ অক্টোবর সালিশের তারিখ নির্ধারণ করলেও মিজান সেখানে উপস্থিত হননি। তিনি অভিযোগ করেন, “দুই দিন আগে মিজান, রেহেনা এবং তাদের ভাড়াটে লোকজনÑকামাল, সাদ্দামসহÑআমার ছোট ছেলে রিয়াজকে হত্যার চেষ্টা চালায় এবং মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়।” অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মুক্তিযোদ্ধার এই সহধর্মিণী বলেন, “আমার ডান পায়ের হাঁটুর রগ ছিঁড়ে গেছে, ঠিকভাবে হাঁটতেও পারি না। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এত কষ্টের পরও নিজের সন্তানদের কাছ থেকে এই নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে। আমি প্রশাসনের কাছে সুবিচার চাই।” তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, “আমি চাই, আপনারা আমার সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে যেন পুরো দেশ জানতে পারেÑএকজন মা কিভাবে নিজের সন্তান দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে।” মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হিসেবে সম্মান ও ন্যায়বিচার পাওয়ার আকুতি জানিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
