ePaper

চৈত্রের খরতাপের মাঝেও ঘন কুয়াশা পঞ্চগড়ে

{"remix_data":[],"remix_entry_point":"challenges","source_tags":[],"origin":"unknown","total_draw_time":0,"total_draw_actions":0,"layers_used":0,"brushes_used":0,"photos_added":0,"total_editor_actions":{},"tools_used":{"transform":1},"is_sticker":false,"edited_since_last_sticker_save":true,"containsFTESticker":false}

রিজু সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি

দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় শীত অনেক আগেই নামে, আবার দেরিতে বিদায় নেয়। চলতি বছর সারাদেশে ফেব্রুয়ারির মধ্যে শীতের আমেজ কেটে গেছে। কিন্তু চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে এসেও পঞ্চগড়ে অনুভূত হচ্ছে শীতের আমেজ। ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে প্রকৃতি। শুক্রবার গভীর রাত থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা পড়ে পঞ্চগড়ের পথঘাট। একই সাথে খানিকটা শীতও অনুভূত হয়। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্য দেখা দেয়ায় বেড়ে যায় তাপমাত্রার পারদ। স্থানীয়রা জানান, শীতের অনুভূতি ফেব্রুয়ারিতে কেটে গেলও চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে আবারও কুয়াশার দেখা মিলেছে। এখন গরমের তীব্রতা বেশি থাকলেও দিনশেষে গভীর রাতে খানিকটা শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই এখনো শেষ রাতে কম্বল গায়ে জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে জেলার মানুষজনকে। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস, ভূগোল ও পরিবেশবিদরা বলছেন, পঞ্চগড়ের অবস্থান হিমালয় পর্বতমালার একেবারে কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব দেখা দেয়। এবারও তেমনটা দেখা যাচ্ছে।

যা বলছে ভূগোল ও পরিবেশবিদরা: পঞ্চগড় সরকারি মহিলা কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যার বিভাগীয় প্রধান তহিদুল বারী বাবু প্রতিবেদককে বলেন, হিমালয় পর্বতমালার কাছাকাছি অবস্থিত বাংলাদেশের উত্তরের পঞ্চগড় জেলা। এ জেলায় শীত আগে এলেও অনেক দেরিতে বিদায় নেয়। শীত বিদায় নিলেও শনিবার যে কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ দেখা গেছে এটা একটি আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব; যা প্রায়ই প্রতিবছরই মাঝেমধ্যে দেখা যায়। তিনি আরো বলেন, দিনের চেয়ে রাতের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কম থাকছে। অপরদিকে দিনের গরম তাপমাত্রা রাতে কমে গিয়ে বাষ্পে পরিণত হচ্ছে। একই সাথে বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে কম থাকায় বর্তমান সময়ে রাতের বেলা ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস কী বলছে: হিমালয় কন্যা খ্যাত দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০-৩৫ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করছে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬-১৮ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করছে। বাতাসে ধূলিকণা আর আকাশে মেঘের উপস্থিতি থাকায় তা বাষ্প হয়ে কুয়াশার পরিমাণ বাড়িয়ে ঝরে পড়ছে। শনিবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, শুক্রবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এদিকে বুধবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সন্ধ্যা ছয়টায় পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিভিন্ন সূত্রে কুয়াশার ব্যাখ্যা: সাধারণত দিনের বেলা সূর্যের যে তাপ ভূপৃষ্ঠ শুষে নেয় রাতে সেটা ত্যাগ করে। এই সময় দিনের তপ্ত ও রাতের শীতল আবহাওয়ার মধ্যকার সংঘর্ষে বাষ্প ঘনীভূত হয়। একই সাথে আকাশের ধূলিকণার পরিমাণ বেশি হওয়ায় এবং তা জমে থাকার পর বাষ্পের সাথে ঝরে পড়ার সময় জলকণার সৃষ্টি হয়ে কুয়াশার রূপ নিয়ে ঝরে পড়ে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র যা বলছে: তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় প্রতিবেদককে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে; যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠেছে। গতকাল এই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দেখা গেছে গত দুদিন ধরে এই এলাকা রাত থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা চাদরে ঢেকে থাকছে। এর কারণটা মূলত পরিবেশে ডাস্ট বা ধূলিকণার পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে। অর্থাৎ ধূলিকণার পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ার কারণে কুয়াশা বেশি হয়েছে। এতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অর্থাৎ বাতাসের আর্দ্রতা অনেকটা কমে গেছে। এই আবহাওয়া আগামী কয়েকদিন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর ধূলিকণা কেটে যাওয়ার পাশাপাশি কুয়াশার পরিমাণও কমে যাবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *