ePaper

চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেলো ২ টাকার চিকিৎসা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে চাঁদপুর শহরে শতবর্ষ ধরে গরিব ও অসহায় মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসা দাতব্য চিকিৎসালয়। ১৯২০ সালে চাঁদপুর পৌরসভা পুরানবাজার এলাকায় চিকিৎসালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। অল্প টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা ও ওষুধ পেয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার জায়গা হয়ে উঠেছিল এটি। মাত্র দুই টাকার বিনিময়ে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ মিলতো এই চিকিৎসালয়ে। হঠাৎ করে চিকিৎসালয়টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, যে চিকিৎসালয় ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে দরিদ্রদের আশ্রয় ছিল, সেখানে আজ চিকিৎসা না পেয়ে রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় চরাঞ্চল ও খেটে খাওয়া মানুষের দাবি, অবিলম্বে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে দাতব্য চিকিৎসালয়টি চালু করতে হবে। নইলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গরিব মানুষ, যারা অন্য কোথাও চিকিৎসার খরচ বহন করতে অক্ষম। দাতব্য চিকিৎসালয়ের বারান্দায় বসে ছিলেন বৃদ্ধা রহিমা বেগম। তিনি  বলেন, ‘আমার এই বয়সে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। প্রাইভেট হাসপাতালে যাবো, টাকা নেই। এইখানেই দুই টাকায় চিকিৎসা পাই, কিছু ওষুধও দেয়। এটা বন্ধ হইলে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না।’ স্থানীয় বাসিন্দা আশিক বিন রহিম ও দুলাল খান বলেন, ‘দাতব্য চিকিৎসালয়টিতে মাত্র দুই টাকার বিনিময়ে অসহায় মানুষরা স্বাস্থ্যসেবা পেতেন। অজানা কারণে এটিও বন্ধ হয়ে গেলো। পৌর প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের প্রতি আহ্বান থাকবে, যত দ্রুত সম্ভব এখানে চিকিৎসক এনে দাতব্য চিকিৎসালয়ের কার্যক্রম আবার শুরু করা হোক।’ চাঁদপুর দক্ষিণাঞ্চল নদীভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান  বলেন, ‘এখানে দীর্ঘদিন এমবিবিএস ডাক্তার ছিল। স্বাস্থ্য সহকারীর মাধ্যমে টিকাকেন্দ্রসহ স্বাস্থ্যসেবা বহাল ছিল। জনস্বার্থের বিপরীত এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা অন্যায় হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’ সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম নজু বেপারী বলেন, ‘কী কারণে এটি বন্ধ করা হলো আমাদের জানা নেই। আমরা চাই, দাতব্য চিকিৎসালয়টি চালু করে আবার মানুষের সেবা দিক।’ এ বিষয়ে চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া বলেন, দাতব্য চিকিৎসালয়টি পৌর অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে আসছিল। মূলত এখানে কোনো চিকিৎসক না থাকায় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আশা করছি চিকিৎসক পাওয়া গেলে দ্রুত এটি আবার চালু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *