ePaper

চাঞ্চল্যকর উপাধ্যক্ষ হত্যার রহস্য উদঘাটন দুই হত্যাকারী গ্রেফতার

মো. দেলোয়ার হোসেন

রাজধানীর হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ মামলা রুজুর ১২ ঘন্টার মধ্যে দুই হত্যাকারীকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরখান থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো-১। মো. নাজিম হোসেন (২১) ও ২। রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩)। মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকান্ডের পরপরই ভিকটিমের ফ্ল্যাট হতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো বটি, একটি ধারালো চাকু ও রক্ত মাখা জামা-কাপড় এবং বিছানার চাদর উদ্ধার করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় জব্দ করা হয়। উত্তরখান থানা সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ২:০০ ঘটিকা থেকে ভোর ৪:০০ ঘটিকার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয় তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার ৬নং ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ মার্চ ২০২৫ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ভিকটিম সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখানের পুরানপাড়া বাতান এলাকায় তার স্ত্রীর পৈত্রিক সম্পত্তিতে বাড়ি নির্মাণ করার জন্য গত ৩/৪ মাস যাবৎ সে এলাকার একটি বাসায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করতেন। সোমবার বিকেলে বাদী সংবাদ পান তার বড় ভাইকে অজ্ঞাতানামা ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার শয়ন কক্ষের ভিতর ফেলে রেখেছে। উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় সকাল ০৭.০০ ঘটিকার দিকে তিনি মারা যান। উত্তরখান থানা পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রস্তুত করে এবং ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রেরণ করে। থানা সূত্র আরও জানায়, মামলাটি রুজুর পর ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ১২ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে উক্ত হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে উত্তরখান থানা পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ফরিদপুর রেলষ্টেশন এলাকা হতে ফরিদপুর সদর থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত হতে দুটি মোবাইলফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার ২/৩ দিন পূর্বে কমলাপুর রেলস্টেশনে ভিকটিম মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়ার সাথে গ্রেফতাকৃত মো. নাজিম হোসেন ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতির পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার সুবাধে ভিকটিম গ্রেফতারকৃতদের তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া রুপা বেগম ওরফে জান্নাতিকে তাহার ফ্ল্যাটে আটক করে শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন শুরু করে। গ্রেফতারকৃতরা নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত রাগ ও ক্ষোভ থেকে সোমবার (১০ মার্চ ২০২৫ খ্রি.) রাতে ধারালো বটি দিয়ে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে উপযুর্পরী আঘাত করে। আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মৃতুবরণ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা এই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *