ePaper

গোবিন্দগঞ্জে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের- বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

গোবিন্দগঞ্জ (গোবিন্দগঞ্জ) প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) বিরুদ্ধে প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার চক গোবিন্দ গ্রামের আলহাজ্ব মাহাবুব রহমানের ছেলে মো. মাহমুদ আলম এই অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগী মো. মাহমুদ আলম তার মালিকানাধীন গোবিন্দগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের আওতাভুক্ত সাড়ে ১২ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ৫৪৫০ বর্গফুট পরিমিত জায়গায় ২৭৮৪ বর্গফুট বিশিষ্ট দ্বিতল ভবনটি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, জোনাল কার্যালয় গাইবান্ধা (দক্ষিণ) এবং জোনাল নিরীক্ষা কার্যালয় গাইবান্ধা (দক্ষিণ) এর জন্য ভাড়া নেয়। ২০২৫ সালের ১ মার্চ থেকে ২০৩০ সালের ২৮ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদী এই চুক্তিতে মাসিক ২২ হাজার টাকা ভবন ভাড়া নির্ধারিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য ইউটিলিটি বিল ইজারা গ্রহীতা অর্থাৎ ব্যাংক পরিশোধ করবে। এছাড়া, প্রতি বছর বাড়ির মেরামত ও রং করার দায়িত্ব ইজারা দাতার (মাহমুদ আলম) উপর ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা দুর্ঘটনায় ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হলে চুক্তি বাতিল বা ভাড়া হ্রাসের বিধানও ছিল। তবে চুক্তি সম্পাদনের পর মাত্র ৭ মাস পরেই, ২০২৫ সালের ১৩ অক্টোবর রাকাব কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি পাঠিয়ে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়। চিঠিতে জানানো হয়, ০৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ৫৯৬তম পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাইবান্ধা (দক্ষিণ) জোন সহ কয়েকটি জোনাল কার্যালয়ের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং ভবন ভাড়া চুক্তি বাতিলের অনুমোদন দেওয়া হয়। চুক্তিতে উল্লেখ ছিল যে, কোনো পক্ষ ৩ মাসের আগাম নোটিশে চুক্তি বাতিল করতে পারবে। রাকাব কর্তৃপক্ষ ১৩ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখে চুক্তি বাতিলের নোটিশ দিলেও, মাহমুদ আলম অভিযোগ করেন যে, ব্যাংকের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছেন। ভুক্তভোগী মাহমুদ আলম জানান, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক গোবিন্দগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক (এসপিও) মো. আবুল ফাত্তাহ এর সাথে তার কথা হয়। তার দ্বিতীয় তলা ভবনটি ৫ বছরের জন্য ও মাসিক ২২ হাজার টাকা ইজারা চুক্তি (লীজ এগ্রিমেন্ট) হয়। ব্যাংকের প্ল্যান অনুযায়ী তিনি বিল্ডিংয়ের কাজ শুরু করেন এবং সম্পূর্ণ করে দেয়। কিন্তু তারা ৭ মাস ধরে ভবনটি উদ্বোধন না করে হঠাৎ করে একটি চিঠি দিয়ে ইজারা চুক্তি বাতিলের কথা জানায়। ১৯ মার্চ অফিসটি উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও, পরে সময় লাগবে বলে ১৩ অক্টোবরে চুক্তি বাতিলের চিঠি পাঠানো হয়। এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক গোবিন্দগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক (এসপিও) মো. আবুল ফাত্তাহ মোবাইল ফোনে জানান, তিনি গোবিন্দগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে জোনাল অফিস ভাড়া নেওয়ার জন্য খোঁজ খবর করতে বলে ছিলেন। তিনি কেন ইজারা চুক্তি করবেন সেখানে যে জোনাল স্যার জতীন্দ্র চন্দ্র বর্মন আছেন, তাকেই জোনাল করে দেওয়া হয়েছে। তিনি সেখান কার জোনাল নন। জতীন্দ্র বর্মন সেখানে দায়িত প্রাপ্ত ছিলেন এবং তারা সাক্ষী হিসেবে ছিলেন। এটি উদ্বোধন কর্মকর্তা বলতে পারেন। এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক জোনাল কার্যালয়, গাইবান্ধা (দক্ষিণ) জোনাল ব্যবস্থাপক জতীন্দ্র চন্দ্র বর্মন মোবাইল ফোনে জানান, তার কর্তৃপক্ষ তাকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন, তিনি সেভাবেই দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্তৃপক্ষ তাকে অর্ডার করার পর তিনি ওখান থেকে চলে আসি। গাইবান্ধার জোনাল ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাফর আলী মল্লিক মোবাইল ফোনে জানান, তিনি প্রতিনিধি পক্ষে স্বাক্ষর করার কিছুদিন পরেই বদলি হয়ে যান। তাই তিনি তেমন কিছু জানেন না এবং উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *