গোবিন্দগঞ্জে ধনিয়াল লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অভিভাবক পক্ষের ভাইলেশন মামলা

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ধনিয়াল লতিফিয়া দাখিল মাদ্রাসার অবৈধ ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিগত ২০২০ সাল থেকে অবৈধ ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে একাধিক মামলার রায় বাস্তবায়ন না করায় বিক্ষুব্ধ অভিভাবকের পক্ষে কোর্ট ভাইলেশন মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার বাদীর অভিযোগ, ম্যানেজিং কমিটি অবৈধ ঘোষণা করে আদালত রায় দিলেও সেই কমিটির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অবৈধ সভাপতি প্রতিষ্ঠানে একাধিক পদে নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। পদগুলোর মধ্যে বর্তমান সুপার আনিছুর রহমান, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটের শাহিদা বেগম, আয়া শামীমা খাতুন, নিরাপত্তা কর্মী মাজহারুল ইসলাম এবং নৈশ প্রহরী মনোয়ার হোসেন। চেতন এলাকাবাসী ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকের দাবি, সব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের তৎকালীন এমপি এবং সাবেক সুপার ৫টি পদে অবৈধ ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বানিজ্যকে সফল করতে তারা নিয়মিত কমিটি করার সময় পার হওয়ায় পরবর্তীতে বিধি না মেনে গোপনে ক্ষমতা ও উৎকোচে ৩০ জানুয়ারি ২০২০ সালে ম্যানেজিং কমিটি করেন। যার বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকদের পক্ষে ২১ অক্টোবর গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জর্জ (চৌকি)আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২৫৪/২০। যার শুনানিতে স্থিতিতাবস্থার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর আবারও একই কায়দায় ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে। যার বিরুদ্ধে শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে অনিয়ম ও বিধি বর্হিভূত কার্যক্রমের সত্যতা উল্লেখ করে প্রতিবেদন শিক্ষাবোর্ডে জমা দিলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। তৎকালীন সুপার অবসরে যাওয়ার পর তারা যোগসাজসে সুপার নিয়োগের পাঁয়তারা করলে আবারও গোবিন্দগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জর্জ (চৌকি) আদালতে মামলা ৩৯/২২ (১৬/০২/২০২২ইং) দায়ের হয়। আদালত কারণ দর্শানোর নোটিশ জারির পর একই বছর ২ জুন উক্ত কমিটির ওপর নিষেধজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে জেলা দায়রা জজ কোর্টে মাদ্রাসা সুপার আবেদন করলে তা উভয়পক্ষের শুনানি শেষে না মঞ্জুর হয়। অপরদিকে ২৫৪/২০ মামলায় বাদী পক্ষের অনুকুলে এবং বিবাদীর বিপক্ষে দোতরফাসূত্রে রায় দেয়। এরপরও আদালতের রায়কে অমান্য করায় ভাইলেশন মামলা ৬৩/২৩ দায়ের হয়; যা চলমান। সর্বশেষ ২০২৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ৩৯/২২ মামলাটির রায়ও বাদীদের (অভিভাবকদের) পক্ষে যায়। এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার আনিছুর রহমান জানান, রায় হলেও নিয়োগগুলোকে অবৈধ বলেনি আদালত। এছাড়া রায়ে কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ভাইলেশন মামলার বিষয়ে সুপার জানান, বাদী ও বিবাদীদের দ্বারা ওটা মিমাংসিত বিষয়। বিষয়টিতে ভাইলেশন মামলার বাদী জানান, ভাইলেশন মামলা চলমান। কোনো মিমাংসা হয়নি। মিমাংসার বিষয়টি প্রচারের বিষয়টি সুপার ও কিছু স্বার্থন্বেষী শিক্ষকের ষড়যন্ত্র মাত্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *