আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা উপত্যকার আল-জাওয়াইদা শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র অভিজাত শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের অন্তত ছয় সদস্য নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ব্রিগেডের জাবালিয়া ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ইয়াহিয়া আল-মাবহুহ রয়েছেন। এই হামলার পর উপত্যকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি বাতিল করেছে ইসরায়েল। রোববার ইসরায়েলি হামলায় হামাসের সশস্ত্র শাখার ওই যোদ্ধারা নিহত হয়েছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কাশেম ব্রিগেডের জাবালিয়া ব্যাটালিয়নের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ওই ব্যাটালিয়নের ইউনিট কমান্ডারসহ ছয় যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে। আল-জাওয়াইদা শহরের উপকূলীয় এলাকায় তাঁবুর ভেতরে স্থাপিত সমুদ্রতীরবর্তী ছোট একটি ক্যাফে লক্ষ্য করে ওই হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বিবিসি বলছে, গাজার ভূমধ্যসাগর লাগোয়া দেইর আল-বালাহ ও খান ইউনুসের মাঝামাঝি এলাকায় আল-জাওয়াইদা শহরের অবস্থান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় কাসেম ব্রিগেডের নিহত ছয় যোদ্ধা উত্তর গাজার বাসিন্দা এবং হামলার সময় তারা মধ্যাঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছিলেন।
গাজা যুদ্ধক্ষেত্রের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার আল-মাবহুহর মৃত্যু যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর হামাসের অভিজাত শাখার জন্য অন্যতম বড় ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, রোববার গাজা উপত্যকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী হামাসের প্রকাশ্য চুক্তিলঙ্ঘনের পর গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পাঠানো স্থগিত করা হয়েছে।এই ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে, যখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। যদিও ইসরায়েলের এই অভিযোগ অস্বীকার করে হামাস বলেছে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় বিমান হামলা পরিচালনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর প্রতিদিন শত শত ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে। এর মাঝেই রোববার ওই উপত্যকায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি বাতিল করলো ইসরায়েল। এর আগে, গত আগস্টে জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে না পারায় ওই উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
