মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার কালিপুরা এলাকায় মেঘনা নদীতে নৌপথে প্রতিপক্ষের গুলিতে স্যুটার মান্নান ৪৫ নামের একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। রবিবার ২৮ জুলাই সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। নিহত মান্নান ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামি ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহতরা হলেন, মো. হামিম ২৫, পিতা চান্দু মিয়া, মো. হৃদয় বাগ ২৮, পিতা হাবুল বাগ এবং মো. হাসিব ২৬, পিতা, অলিউল্লাহ তাদের প্রতেকে বাড়ি গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে। তারা মুন্সিগঞ্জ আদালতে পূর্বের মামলার হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় এ হামলার শিকার হন বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানায়, একটি ইঞ্জিনচালিত কাঠের ট্রলারে নদীপথে যাওয়ার সময় আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ সশস্ত্র হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই মান্নান নিহত হন। ট্রলারটির এক প্রান্তে মান্নানের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ট্রলারের ভেতর একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন, সিগারেটের প্যাকেট ও সোলার সিস্টেম পাওয়া যায়। নিহতের স্ত্রী সুমি বেগম ৩৫ দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরেই লালু বাহিনীর সদস্যরা তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনি বলেন, আমার স্বামী অপরাধ করলে আইন আছে, আদালত আছে, তারা বিচার করতো। কিন্তু লালু বাহিনী কেন তাকে মেরে ফেললো! তবে মান্নানের সঠিক স্থায়ী ঠিকানা সম্পর্কে স্ত্রী প্রশ্ন করলে কোনো স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেননি একবার বলেন দাউদকান্দি, আবার বলেন নারায়ণগঞ্জ। স্থানীয়রা জানায়, মান্নানের জন্মস্থান গজারিয়ায় না হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের জষ্টিতলা গ্রামে বসবাস করতেন এবং সম্প্রতি গজারিয়াতে ভোটার হন বলেও জানায়। তার একমাত্র ছেলে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে মায়ের সঙ্গে থেকে স্থানীয় একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই মেঘনা নদীতে বালুর টাকা ভাগবাটোয়ারা, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লালু গ্রুপ ও মান্নান গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আজকের গুলির ঘটনাও সেই বিরোধের ধারাবাহিকতা। তারা আরও জানান, গ্রামে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এ দুই গ্রুপই দায়ী। গজারিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর হাসান জানান, নিহত মান্নানের পেট ও বুকের দুটি স্থানে ছিদ্র রয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে গুলির আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। বিস্তারিত তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (পিআইবি) ঘটনাস্থলে আসছে বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ জানায়, মান্নানের স্ত্রীর দাবি লালু বাহিনী তার স্বামীকে হত্যা করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইন আনুক ব্যবস্থা নিবো। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ দায় স্বীকার করেনি এবং পুলিশ তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানাবে বলে জানিয়েছে।
