ePaper

কুষ্টিয়া নারী চিকিৎসককে পিটিয়ে পুলিশে দিলো বিক্ষুব্ধ জনতা

আহসান বিশ্বাস, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ায় শারমিন সুলতানা নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরি, ঘর, জমি, ভাতা দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রলোভনে অর্ধ শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরনা দেওয়ার পরও পাওনা টাকা না পেয়ে ওই চিকিৎসককে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সোমবার দুপুর ১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এমবিবিএস ডিগ্রিধারী ওই চিকিৎসক কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখেন। ভুুক্তভোগীদের একজন মেহেরপুরের মুজিবনগর এলাকার সুমি খাতুন বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে ডাক্তার শারমিন সুলতানার কাছে এসেছিলাম। তার কাছে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। বেশ কয়েক বছরের পরিচয়। ৭-৮ মাস আগে সরকারি চাকরি ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে তিনি আমাদের কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন। তার প্রলোভনে পড়ে আমি, আমার আত্মীয়-স্বজনসহ ৩০ থেকে ৪০ জন তাকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা দিয়েছি। অথচ তিনি আমাদের টাকাও ফেরত দেন না, চাকরিও দেন না, জমি-ভাতা কিছুই দেন না। তাই আজ আমরা কুষ্টিয়ায় এসেছি। আমরা চিকিৎসক নামের এই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আরেক ভুক্তভোগী চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার সালমা খাতুন বলেন, ‘ডাক্তার শারমিন সুলতানা সরকারি চাকরি, জমি, ঘরবাড়ি ও ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে আমার মতো ৫০-৬০ জনের কাছে থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। আমরা ভুক্তভোগীরা সবাই চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমার জামাইয়ের কাছ থেকে দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আমার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই। একইভাবে প্রতারণার শিকার হয়েছেন দর্শনা এলাকার খাদিজা খাতুন। তিনি বলেন, ‘জমি দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে ডাক্তার শারমিন। এখন টাকাও ফেরত দেয় না, জমিও দেয় না। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা এলাকার জাহিরা খাতুন বলেন, ‘আমার কেউ নেই। আমি খুব গরিব মানুষ। আমার দুইটা ছাগল ছিল। সেই ছাগল বিক্রি করে শারমিন ডাক্তারকে টাকা দিয়েছি। সরকারি ঘর দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। পরে টাকাও দেয় না, ঘরও দেয় না। আমরা ওই ডাক্তারের শাস্তি চাই। এ বিষয়ে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি তাদের কাছ থেকে কোনো টাকা নিইনি। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী নারী। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *