ePaper

কুষ্টিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও গাছ কর্তনের অভিযোগ

আল আমিন,কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের পশ্চিম বাহিরচর মুসুল্লিপাড়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়েছেন। এ সময় হামলাকারীরা ভুক্তভোগীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে নগদ অর্থ লুটপাটের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে আহত ব্যবসায়ী কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিম বাহিরচর মুসুল্লিপাড়ার মোড়ে অবস্থিত ভুক্তভোগীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শনিবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নেতৃত্ব দেয় স্থানীয় মো. নাজিম আলী (২৮), তার পিতা মো. তুরাপ আলী (৫৫), ভাই মো. সৌরভ আলী (৩৫) এবং আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে সশস্ত্র হামলা চালায়। প্রথমে আসামিরা ব্যবসায়ীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় প্রতিবাদ করলে নাজিম আলী হাতে থাকা লোহার হাসুয়া দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারেন। এতে ব্যবসায়ীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ভেঙে যায়। এরপর তুরাপ আলী লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন এবং দোকানের ড্রয়ার থেকে নগদ ২০ হাজার ৩০০ টাকা নিয়ে যান। অপরদিকে সৌরভ আলী কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করে আরও জখম করে এবং খুনজখমের হুমকি প্রদান করে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা দোকানের আসবাবপত্র ও বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে, এতে প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। একই সঙ্গে দোকানের পাশের বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলা হয়, যার ফলে অতিরিক্ত ক্ষতি সাধিত হয়েছে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী মো. ডাবলু বিশ্বাস, মো. নাসিম আলী ও মো. রজব আলী জানান, তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আসামিরা খুনজখমের হুমকি দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। ভুক্তভোগী আবুল কালাম অভিযোগ করে বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। শুধু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, আমার লাগানো বিভিন্ন জাতের গাছ আজ সকালে কর্তন করেছে। হামলাকারীরা যে কোনো সময় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের ওপর আরও বড় ক্ষতি করতে পারে।” তিনি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। বন কর্মকর্তার মন্তব্য গাছ কর্তনের বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলার এক বন কর্মকর্তা বলেন, “গাছ কাটা অন্যায় কাজ হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগীকে আইনের সহযোগিতা করব। ইতোমধ্যেই বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার তদন্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে আহত ব্যবসায়ী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *