ePaper

কুয়াকাটায় ধরা পড়লো বিরল প্রজাতির অ্যাঞ্জেলফিশ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় এক জেলের জালে ধরা পড়েছে সম্রাট অ্যাঞ্জেলফিশ নামের একটি বিরল প্রজাতির মাছ। কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এটি ধরা পরে। রঙিন এই মাছটি দেখতে ভীর করেন স্থানীয় উৎসুক জনতা। গতকাল রোববার সকালে মহিপুর বন্দরে নিয়ে আসলে মাছটিকে দেখতে মৎস্য বন্দরে হইচই শুরু হয়ে যায়। তবে মাছটি দেখতে আসা উৎসুক জনতার মধ্যে কেউ কেউ আবার বলছে, এটি অ্যাকুরিয়াম ফিস। আনোয়ার মাঝির জালে ধরা পড়া মাছটি এখনো বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছে আড়ৎদার। জেলে আনোয়ার বলেন, ট্রলার নিয়ে আমরা গত এক সপ্তাহ আগে সমুদ্রে যাই। সমুদ্রে সচারাচর এরকম মাছ বিগত দিনে আর পাইনি এবং এ মাছের দাম সম্পর্কেও কোনো ধারনা নেই। এবার সমুদ্রে গিয়ে ফিসিং করার সময় অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের সঙ্গে এটি পাওয়া যায়। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আ. রহিম খান বলেন, মাছটি প্রথম দেখে আমি ভেবেছিলাম এটি হয়তো অ্যাকুরিয়ামের মাছ। পরে শুনি সমুদ্রে পাওয়া গেছে। মাছটি খুব ভালো লাগায় আমি ছবি তুলে আমার ফেসবুকেও আপলোড করেছি। তবে এ জাতীয় মাছ আমি এই প্রথম দেখলাম। মাছটি খাওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে আমার জানা নেই। ওয়ার্ল্ডফিশ-বাংলাদেশ’র গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, মাছটির বাংলা নাম ‘অ্যাঞ্জেলফিশ’, বৈজ্ঞানিক নাম। এটি অত্যন্ত রঙিন একটি সামুদ্রিক মাছ। এর প্রাকৃতিক আবাসস্থল ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরের প্রবাল প্রধান অঞ্চল। সর্বোচ্চ প্রায় ৪০ সেমি (১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত বড় হতে পারে। গায়ের গাঢ় নীল পটভূমিতে হলুদ অনুভূমিক দাগ, মুখে নীল-কালো ‘মাস্ক’ প্যাটার্ন। তিনি বলেন, মাছটি সাধারণত প্রবাল প্রধান, লবণাক্ত, উষ্ণ সমুদ্র অঞ্চলে থাকে। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এমন মাছ সচরাচর ধরা পড়ে না। কারণ আমাদের উপকূলীয় অংশ মূলত কাদামাটি, বালুময়, প্রবাল প্রাচীর তেমন নেই। তবে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে আন্দামান সাগর-সংলগ্ন, মিয়ানমার উপকূলের কাছাকাছি কিছু প্রবাল প্রধান এলাকা আছে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও স্রোতের ধরণ বদলের কারণে কিছু সামুদ্রিক প্রজাতি তাদের আবাসক্ষেত্র প্রসারিত করছে। এর কারণে হয়তো এই প্রজাতিটি বাংলাদেশের জেলেদের জালে ধরা পরছে। মাছটি প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, মাছটি বাংলা নাম অ্যাঞ্জেলফিশ, এটি একটি বিরল প্রজাতির মাছ। মাছটি উপকূলে সচরাচর দেখা যায় না, গভীর সমুদ্রের থাকে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে এটি জেলের জালে উঠে এসেছে। এটা জেলেদের জন্য একটি সুখবর। এসব মাছ যত বেশি ধরা পড়বে জেলেরা অর্থনৈতিকভাবে তত বেশি লাভবান হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *