কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে, এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির তৃণমূল থেকে উঠে আসা অনেক নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার লাকসামে যুবদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপ (আজিম গ্রুপ এবং চৈতি কালাম গ্রুপ) এর মধ্যে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়া’র ঘটনা ঘটলে বিষয়টি আবারও আলোচনায় আসে। জানা যায়, কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) নির্বাচনী আসনটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ঘাটি হিসেবে পরিচিত হলেও স্থানীয় বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলতার কারণে দিনে দিনে লোফ পেতে বসছে এর জনপ্রিয়তা, দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ছে কর্মী সমর্থকগণ। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে চান তৃণমূল থেকে থেকে উঠে আসা দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূল থেকে উঠে আসা অনেক নেতা কর্মীরা আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি বিএনপি হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করে দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ ব্যাপারে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী করেন তারা। বিএনপি’র স্থানীয় অনেক কর্মী সমর্থকগণ অভিযোগ করে বলেন, লাকসাম-মনোহরগঞ্জে বিএনপি বর্তমানে তথাকথিত দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি হচ্ছে সাবেক এমপি আজিম গ্রুপ আরেকটি হচ্ছে আবুল কালাম গ্রুপ। দুটি গ্রুপ প্রধানদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এক সময়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আনোয়ারুল আজিম বয়সের ভারে এবং শারীরিক অসুস্থতায় অনেকটা নুহ্য হয়ে পড়েছেন। তার অনুসারীরা হয়ে পড়েছেন অনেকটা ছত্রভঙ্গ। কমিটির বিষয়ে তার কোন হস্তক্ষেপ নেই। অসুস্থতার অজুহাতে যোগ দিতে পারছেন না তেমন কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। রাজনৈতিক কোন বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে অথবা অর্থনৈতিক কোন সহযোগিতার প্রয়োজনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। হতাশাব্যক্ত করে এমন অভিযোগই করছেন খোদ তার অনুসারীরাই। অন্যদিকে আরেকটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম (চৈতি কালাম)। স্থানীয় নেতা কর্মীদের ভাষ্যমতে, টাকার প্রভাব দেখিয়ে আবুল কালাম বিভিন্ন জায়গায় আহবায়ক কমিটি গঠন করতে পারলেও নেতৃত্ব দেবার জন্য সঠিক লোক পাচ্ছেন না। অনেকে আবার টাকার লোভে তার সাথে ভিড়লেও মূলধারার বিএনপিকেই তারা খুঁজছেন। দলীয় স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে লাকসাম উপজেলার একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আজিম- কালাম তারা কেউই মূল ধারার বিএনপি থেকে উঠে আসা নেতা নয়। দলের জন্য এজন্য তাদের সেরকম ভালোবাসা নেই। তারা দুজনই এখন জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এমতাবস্থায় (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ)’র মানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে এই দুইয়ের বাহিরে সর্বাধিক সমাদৃত এবং গ্রহণযোগ্য এই আসনটি ধরে রাখতে হলে অন্য কাউকে আগামী সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া এখন সময়ের দাবি।