ePaper

কাজ করলে খাবার জোটে, কাজ না পেলে অনাহারে দিন কাটে হামিদা খাতুনের

রফিকুল ইসলাম,সিরাজগঞ্জঃ

সিরাজগঞ্জে কবরস্থানের জায়গার ভূতুরে পরিবেশে বসবাস করতেন হামিদা। পরে স্থানীয়রা ভিটা বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে থাকতে দিয়েছেন। ভাঙা ঘরের উপরে নেই চাল, ভেতরে নেই আলো। পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই। কাজ করলে খেতে পায়, কাজ না পেলে না খেয়ে দিন-রাত কেটে যায়। কী নিদারুণ কষ্টে বেঁচে আছেন হামিদা খাতুন! তার স্বামীর নাম মৃত হবিবুর রহমান। হামিদার বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের দো-গাড়িয়া গ্রামে। হামিদা খাতুন (৬১) জানান, দুই মেয়ে রেখে তার স্বামী হবিবুর রহমান মারা গেছেন বহু দিন আগে। অভাবের তাড়নায় বড় মেয়ে হাবিজা খাতুনকে এক বাড়িতে কাজে রেখেছিলেন। তারাই বিয়ে দিয়েছেন। ছোট মেয়ে ছাদিয়াকে দত্তক দিয়ে দেন। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে। দরিদ্রতার নিষ্ঠুর কষাঘাতে এভাবে বেঁচে থাকা খুব কষ্টের! কি খেয়েছেন জিজ্ঞেস করলে হামিদা খাতুন বলেন, ‘কাম করলে পেটোত ভাত যায়, না করলে নাই’সরেজমিনে দেখা যায়, বিধবা হামিদার ঘর একেবারে জরাজীর্ণ। মাটির দেয়াল ভেঙে গেছে। ঘরের চালে পলিথিন দিয়ে রেখেছেন। বৃষ্টির পানি পড়ে ঘরের মেঝে-দেয়াল স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকে। বিশেষ করে বসবাসের অযোগ্য পরিবেশে  মানবেতর জীবন যাপন করছেন হামিদা খাতুন। এদিকে দো-গাড়িয় গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তফিজ উদ্দিন (৮২) বলেন, আমার পরিত্যক্ত ভিটে-বাড়িতে হামিদাকে থাকতে দিয়েছি। তার অনেক কষ্ট। দুনিয়াতে দেখার মতো কেউ নেই। সমাজের কোন হৃদয়বান মানুষ একটি ঘর করে দিলে বড়ই উপকার হত। অপরদিকে দো-গাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হান্নানের স্ত্রী সাবানা বেগম বলেন, খিদের জ্বালা একজন মানুষ কতক্ষণ সইতে পারেন। মাঝে-মধ্যেই প্রতিবেশীদের বাড়িতে কান্না করেন হামিদা একমুঠো ভাতের জন্য।এ গ্রামের আব্দুল ওয়াহার ও ছাদিকুল ইসলাম নামে দুই তরুণ বলেন, হামিদার বাড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা নেই, নলকূপ নেই, পায়খানা নেই। বিধবা ভাতা কার্ডও হয়নি তার।এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমি আগামী ১০ দিনের মধ্যে হামিদা খাতুনের জন্য টিন ও কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *