ePaper

কক্সবাজারে ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী বর্ধিত উৎসেকর বাতিল ,প্রসংশায় পঞ্চমুখ সালাহউদ্দিন আহমদ

নুরুল আলম সিকদার, কক্সবাজার

কক্সবাজারে স্থবির হয়ে পড়া ভূমির দলিল নিবন্ধন আলোর মুখ দেখেছে। বাতিল হলো কক্সবাজার জেলায় ভূমির দলিল নিবন্ধনে বর্ধিত উৎসেকর। কক্সবাজারের ভূমিপুত্র, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় কক্সবাজারের মানুষের উপর চাপিয়ে দেয়া ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী উৎসেকরের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসে। এতে করে কক্সবাজার জেলাবাসী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। সূত্র জানায়, বিগত আগস্ট মাসে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ কক্সবাজারবাসীর এই মহাসংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দু’দফা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, কক্সবাজারের সন্তান সালাহউদ্দিন আহমদের শরণাপন্ন হন। তিনি বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে কক্সবাজারে ভূমির দলিল নিবন্ধনে আকাশচুম্বী উৎসেকর বাতিলে সেসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, জাতীয় নিবন্ধন মহাপরিদর্শক, ভূমি সচিব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সাথে পৃথক দফায় দফায় কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। তারই আলোকে অবশেষে কক্সবাজারবাসীর মাথা থেকে অবশেষে অতিরিক্ত ভূমি নিবন্ধনে উৎসেকরের বোঝা কমলো। এদিকে বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ভূমি দলিল নিবন্ধনে অতিরিক্ত করের বোঝা বাতিলের সিদ্ধান্তে বিশেষ ভূমিকা রাখায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, কক্সবাজারের সন্তান সালাহউদ্দিন আহমদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এ-উপলক্ষ্যে এক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অনুষ্ঠান কক্সবাজার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কক্সবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আবুল হোছাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সালাহউদ্দিন আহমদের ভূমিকা নিয়ে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন মিজান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, অর্থ সম্পাদক আলহাজ্ব রেজাউল করিম চৌধুরী, চকরিয়া সভাপতি শরীফুল ইসলাম, টেকনাফ সভাপতি সৈয়দুর রহমান প্রমূখ। অন্যদিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানায়। এনবিআরের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ২৪ জুন জারি করা পরিপত্র সংশোধন করে বর্ধিত করহার বাতিল করা হয়েছে। এর আগে, ২৪ জুনের পরিপত্রে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এলাকায় ও জেলা সদরের পৌরসভাগুলোর ৮১টি মৌজায় নাল জমিতে শতকপ্রতি ২৫ হাজার এবং আবাসিক জমিতে শতকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা উৎসকর আরোপ করা হয়। ফলে জেলায় জমি ক্রয়-বিক্রয় কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে। অতিরিক্ত উৎসকরের কারণে অযৌক্তিক আর্থিক চাপ, দলিল নিবন্ধন কার্যক্রমে অচলাবস্থা, জমি হস্তান্তরে জটিলতা তৈরি হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। জেলা জুড়ে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয় এই গনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কিন্তু কাজের কাজ কি কিছুই হয়নি। কক্সবাজার দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক সালাহউদ্দিন মিজান বলেন, “বর্ধিত উৎসকরের সরকার আরোপিত সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছিল।কক্সবাজারে দলিল নিবন্ধন কার্যত থমকে গিয়েছিল। কয়েক মাস ধরে আমরা আন্দোলন করেছি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সর্বশেষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে আগস্ট মাসের শুরুতে এবং মাঝামাঝি সময়ে দু’দফা আমরা কক্সবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ ঢাকায় অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, জাতীয় নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের সাথে গুলশান কার্যালয়ে গিয়ে সাক্ষাৎ করি। উনি বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে কক্সবাজারবাসীর স্বার্থে এনবিআর চেয়ারম্যান, জাতীয় নিবন্ধন মহা-পরিদর্শক, ভূমি সচিব, অর্থ সচিব এর সাথে আলাদা কথা বলেন এবং ভূমি নিবন্ধনে আকাশচুম্বী উৎসেকর বাতিল করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেন। তারই আলোকে অবশেষে বাতিল হলো ভূমি নিবন্ধনে চাপিয়ে দেয়া উৎসেকর। এই কালো আইন বাতিল হওয়ায় কক্সবাজারের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য ১৩ আগস্ট মহা-পরিদর্শক (নিবন্ধন) এর কাছে আবেদন করে জেলা রেজিস্ট্রার। পরে ২০ আগস্ট এনবিআর চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধিক্ষেত্রভুক্ত ৮১টি মৌজায় করহার ‘অন্য কোনো উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ ধারা অনুসারে আরোপ করা হয়েছিল। সচেতন মহলের মতে, সমুদ্র উপকূলীয় অনুন্নত অঞ্চল যেমন মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়া ও সেন্টমার্টিনের জন্য এ হার সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ছিল। প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে কক্সবাজারে বর্ধিত উৎসকর বাতিল হওয়ায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে আবার গতি আসবে বলে আশা করছেন জেলা রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *