পাবনা প্রতিনিধি
গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে পাবনার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক বছরের মধ্যেই মো. মফিজুল ইসলাম তার সততা, নিষ্ঠা এবং জনবান্ধব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পাবনাবাসীর মনে এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছেন। গত বছর সেপ্টেম্বরে তিনি পাবনার এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং সেই থেকে তিনি যেন মাটির মানুষের এক নতুন আলোর দিশারী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। মো. মফিজুল ইসলামের জীবন যেন এক অনুপ্রেরণার গল্প। এক সাধারণ পরিবারে তার জন্ম; দাদা ছিলেন মসজিদের ইমাম এবং বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। অভাব-অনটনের মধ্যেও পরিবারে শিক্ষার প্রতি ছিল গভীর ভালোবাসা, যার ফলস্বরূপ পাঁচ ভাই ও দুই বোন সবাই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পেরেছেন। তার এই সাদাসিধে জীবনযাত্রা ছোটবেলা থেকেই শুরু। বিলাসবহুল জীবন বা নতুন পোশাকের প্রতি তার কোনো আকর্ষণ ছিল না। পড়াশোনায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। এমনকি কলেজে পড়ার সময় পড়াশোনার খরচ জোগাতে তিনি নিজে অতিরিক্ত কাজ করতেন, কিন্তু কখনো কারো কাছে সাহায্য চাননি। মো. মফিজুল ইসলাম তার কর্মজীবন শুরু করেন একজন প্রকৌশলী হিসেবে। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে কাজ করেন। এরমধ্যে ২০০৪ সালে তিনি ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নরওয়েতে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে তিনি তার পেশাগত দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তোলেন। তার কর্মজীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি তার সততা ও নিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। পাবনার জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি তার কার্যালয়কে সাধারণ মানুষের জন্য একটি ‘অদূরঘর’ হিসেবে তৈরি করেছেন। আগে যেখানে সাধারণ মানুষ জেলা প্রশাসকের কক্ষে ঢুকতে ভয় পেত, সেখানে আজ ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবার জন্য তার দরজা সবসময় খোলা। তার এই জনবান্ধব আচরণ জনগণের মাঝে এক নতুন আস্থা তৈরি করেছে। একবার অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তিনি একদিনের জন্যও ছুটি নেননি, যা তার দায়িত্ববোধের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। পাবনার মানুষ বিশ্বাস করে, একজন প্রশাসক এমনই হওয়া উচিত। তাদের চোখে, মো. মফিজুল ইসলামের কাছে অর্থ বা ক্ষমতার কোনো লোভ নেই, বরং তার মূল লক্ষ্য হলো জনগণের সেবা এবং মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন। তার সততার গল্প আজ মানুষের মুখে মুখে ফেরে। পাবনাবাসীর প্রত্যাশা, এমন সৎ ও আদর্শবান প্রশাসক আরও অনেক আসবেন, যারা জনগণের সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করে যাবেন।
