ইয়েমেনে হামলা শুরু করল ইসরায়েল, মধ্যপ্রাচ্যের এ অঞ্চলে নতুন এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইয়েমেনের সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে, যাকে তারা হুতি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের প্রতিক্রিয়া হিসেবে চিহ্নিত করছে। ইসরায়েলের দাবি, তাদের হামলা ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলের হোদেইদাহ প্রদেশ এবং রাজধানী সানার সামরিক স্থাপনার দিকে ছিল, যেখানে বন্দর এবং জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ্য ছিল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি বলেন, “আমরা হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছি, যেখানে তাদের অস্ত্রাগার ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রয়েছে।” ইসরায়েলি হামলার পর, হুতি–ঘনিষ্ঠ টেলিভিশন চ্যানেল আল মাসিরাহ জানায়, হামলায় ৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে হোদেইদাহের সালিফ বন্দর এলাকায়, এবং বাকিরা রাস ঈশা জ্বালানি অবকাঠামোয় মারা গেছেন।
হামলার পর, আল মাসিরাহ টেলিভিশন চ্যানেল আরও জানায়, সানা ও হোদেইদাহে ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক আক্রমণ চালিয়েছে, যার মধ্যে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা এবং হোদেইদাহ বন্দরে চারটি হামলা অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া, জ্বালানি অবকাঠামোতে দুটি হামলা করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে এসব হামলায় ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
হুতি বিদ্রোহীদের প্রতিক্রিয়া ও ইসরায়েলের অবস্থান
এ হামলার পেছনে ইসরায়েলের দাবি, হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েল অভিমুখে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা তাদের আক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, হুতি বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাদের রাজনৈতিক শাখা এবং সামরিক বাহিনী এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিতে পারে।
ইয়েমেনের পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের সামরিক নীতি
ইয়েমেনের পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই সংকটজনক, যেখানে হুতি বিদ্রোহী এবং সৌদি সমর্থিত সরকারের মধ্যে ব্যাপক সংঘাত চলমান। ২০১৪ সাল থেকে চলা এই যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনের অনেক অঞ্চল ধ্বংস হয়ে গেছে এবং লাখ লাখ মানুষ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। ইসরায়েলের সামরিক হামলা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।
বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া
ইসরায়েলের হামলায় ৯ জন নিহতের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিশেষ করে আরব দেশগুলোর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে। ইয়েমেনে সংঘাত এবং ইসরায়েলের এই সামরিক আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে। এটি একদিকে যেমন মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই হামলার ওপর নজর রাখবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে, তারা ইয়েমেনের আক্রমণের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবে। তবে, ইয়েমেনের পরিস্থিতি আরো জটিল হতে পারে এবং এই হামলার ফলে নতুন করে সংঘাতের শঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে।
এখন পর্যন্ত, ইসরায়েলি হামলার পর ইয়েমেনের আক্রমণের ফলে যে মানবিক ক্ষতি হয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, এবং এই পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণভাবে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন:
- জাস্টিন ট্রুডোর রাজনৈতিক ভাগ্য সুতায় ঝুলছে, সামনে যা ঘটতে পারে
- আফগানিস্তানে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনা: ৫২ জন নিহত ও ৬৫ জন আহত
Share Now